নয়াদিল্লি: বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র চিন৷ বিস্তারবাদ নীতিতে বিশ্বাসী চিনের আর্থিক নীতিও অত্যন্ত কৌশলী৷ যা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বারেবারে সতর্ক করেছেন৷ চিনের দেওয়া ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়েছে একের পর এক দেশ৷ যার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। আর এক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের অবস্থাও সঙ্গীন। চিনা ঋণে রীতিমতো জর্জরিত ইসলামাবাদ।
আরও পড়ুন- হিজাব পরেননি কেন? ‘শাস্তি’ দিতে তরুণীকে থানায় নিয়ে গেল পুলিশ, পরে রহস্যমৃত্যু
সম্প্রতি একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, চিনা ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ৯৭টি দেশ৷ ওই রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, চিনের কাছে সবচেয়ে বেশি ঋণ রয়েছে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপের৷ সাম্প্রতিক ফোর্বসের রিপোর্ট বলা হয়েছে, পাকিস্তানকে ৭৭.৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বেজিং। চিনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ মাথায় নিয়ে বসে রয়েছে ইসলামাবাদ। মালদ্বীপের ঋণের পরিমাণও কম নয়৷ চিনের কাছে তাদের যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে তা ছোট্ট দেশটির Gross National Income (GNI) -এর ৩১ শতাংশ।
২০২০ সালের বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি ফোর্বস এই রিপোর্টটে প্রকাশ করেছেন৷ যেখানে বলা হয়েছে, চিনা ঋণের ফাঁদে পা দেওয়া ৯৭টি দেশের মধ্যে অধিকাংশই আফ্রিকার ক্ষতিগ্রস্থ দেশ। আফ্রিকা ছাড়াও মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার বেশ কয়েকটি দেশও এই ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে৷
পরিসংখ্যান বলছে, চিনের মোট যে ঋণ দিয়েছে, তার ৩৭ শতাংশই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা দেশ৷ মূলত এই দেশগুলিতে বন্দর, রেল, রাস্তা তৈরির জন্য ঋণ দেয় শি জিনপিং-এর দেশ। একবার ঋণ নেওয়ার পরই তাদের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ে দেশগুলি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋণের ভারে ক্রমশ আর্থিক ভাবে ভেঙে পড়ে দেশগুলির অর্থনীতি।
সম্প্রতি মলদ্বীপের অর্থ মন্ত্রকের তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, চিনের কাছে তাদের ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ বিলিয়ন মলদ্বীপিয় মুদ্রা। যা এই ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রের মোট জিডিপি-র ১১৩ শতাংশ। তবে ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকার দুই দেশ দজিবউটি ও অ্যাঙ্গোলার। এই দুই দেশের ঋণের পরিমাণ তাঁদের Gross National Income (GNI) -এর ৪০ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে।
এদিকে, দিন কয়েক আগে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। সে দেশে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বিষয়টি জানিয়েছেনও পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও শোচনীয়। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতির মেরদণ্ড। যার ফলে ৬.৩ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>