জোহানেসবার্গ: কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষ মাস৷ ব্যতিক্রম হয়নি করোনার প্রকোপের ক্ষেত্রেও৷ বিপর্যস্ত সময়ে একদিকে যেমন টান পড়েছে অধিকাংশের রুটি-রুজিতে, তেমন অন্য দিকে চুটিয়ে ব্যবসা করেছে মাস্ক-স্যানিটাইজার বিক্রেতা৷ একই রকম ভাবে এই অতিমারীর প্রকোপে মনুষ্য সমাজের যখন করুণ দশা, তখন বহাল তবিয়তে রয়েছে পশু-পাখিরা৷
লকডাউনের সময়ে যেমন দূষণহীন আকাশে উড়তে দেখা গিয়েছে অনেক চেনা-অচেনা পাখিকে, তেমনই নীল জলে গা ভাসিয়েছে অনেক জলজ প্রাণী৷ শুধু ভারত নয়, গোটা দুনিয়াজুড়েই দেখা মিলেছে এন ছবির৷ মানুষ ঘরবন্দি হওয়ার সুবাদে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে প্রকৃতি ও অন্য জীবজগৎ৷ লকডাউন হওয়ার কারণে দূষণের মাত্রা ব্যাপক হারে কমায় প্রচুর বিরল দৃশ্যের দেখা মিলেছে, যা হারিয়ে গিয়েছিল সভ্যতার উন্নয়নের রোলারকোস্টারে৷
কেমন সেই সব দৃশ্য? একটা ছোট্ট উদাহরণ দেওয়া যাক৷ দক্ষিণ আফ্রিকায় জনমানবহীন ক্রুগার ন্যাশানাল পার্কের রাস্তায় নিশ্চিন্তে ঘুমোতে দেখা গিয়েছে একদল সিংহকে। প্রতিদিনের মতোই নিয়মমাফিক টহল দিতে সেখানে গিয়েছিলেন পার্ক রেঞ্জার রিচার্ড সৌরি৷ সকালবেলায় গাড়ি নিয়ে গিয়ে পার্কের রাস্তায় এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখে তড়িঘড়ি তা ফ্রেমবন্দি করেন মুঠোফোনে৷ সিংহের দলের থেকে তখন মাত্র পাঁচ মিটার দূরত্বে দাঁড়িয়েছিলেন রিচার্ড। তিনি বলেন, প্রতিদিন পার্কের রাস্তায় গাড়ি দেখার অভ্যাস বন্যপ্রাণীদের রয়েছে।
তবে মানুষের আনাগোনায় ওরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়। কিন্তু সেদিন গাড়ির আওয়াজ পেয়েও তারা ওরা উঠে যায়নি। তাই খুব সহজেই একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারেন রিচার্ড। চোরাশিকারিদের হাত থেকে বন্য জীবজন্তুকে বাঁচাতে পার্কে নিয়ম করে হাজির হতে হয় রেঞ্জারদের। ব্যতিক্রম নেই লকডাউনেও৷ আর সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই এমন বিরল ঘটনার সাক্ষী হওয়া রিচার্ডই জানিয়েছেন, শীতের সময় এমন দৃশ্য কখনও কখনও দেখা যায়। বনের ঘাস-মাটির চেয়ে পিচের রাস্তা গরম থাকে বলে, রাস্তায় এসে শুয়ে থাকে ওরা। কিন্তু ভরা গ্রীষ্মেও যে তুমি এভাবে কে তা জানত!