ওয়াশিংটন: বার বার বিজ্ঞানীরা দাবি জানিয়েছেন, সৌরজগতের বাইরে অন্য নক্ষত্রমণ্ডলে কোনও সভ্যতা রয়েছে। ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে বিজ্ঞানীদের একাংশের কৌতুহলের শেষ নেই। সেই ভিনগ্রহের প্রাণীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নাসার বিজ্ঞানীরা উঠে পড়ে লেগেছেন। নাসার বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর তরফে মহাকাশে সাংকেতিক আমন্ত্রণ বার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
জানা গিয়েছে, মহাকাশে সাংকেতিক আমন্ত্রণ বার্তা পাঠানোয় বদ্ধ পরিকর নাসার বিজ্ঞানীরা। খুব শীঘ্রই মহাকাশের বিভিন্ন ছায়াপথের বিশেষ বিশেষ অংশে নাসার তরফে সাংকেতিক আমন্ত্রণ বার্তা পাঠানো হবে। ভিনগ্রহীদের নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের একাংশ আশঙ্কা করছেন, নাসার এই সাহসী পদক্ষেপ পৃথিবীকে বড় ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।
সৌরজগতের বাইরে যে অসংখ্য নক্ষত্রমণ্ডল রয়েছে, সেখানেই প্রাণের সন্ধান থাকতে পারে। থাকতে পারে প্রাণী। বিজ্ঞানীদের একাংশের ধারণা মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণী বর্হিবিশ্বে থাকতে পারে। এই নিয়ে নাসার বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরে গবেষণা করে চলেছেন। কিন্তু সেভাবে সৌরমণ্ডলের বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু এবার ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধান পেতে মরিয়া নাসার বিজ্ঞানীরা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁরা বর্হিবিশ্বে একটি সাংকেতিক ভাষা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছেন। সেখানে পৃথিবীতে বসবাসকারী মানুষের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি মানুষের মহিলা ও পুরুষের বর্ণনা দেওয়া হবে। পাঠানো হবে পুরুষ ও মহিলার ছবি। পৃথিবীর বর্ণনাও দেওয়া হবে সেই সাংকেতিক ভাষায়। পৃথিবীতে আসার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সাংকেতিক ভাষায় অনুরোধ করা হবে৷
এর আগে ১৯৭৪ সালে এই ধরনের সাংকেতিক ভাষায় আমন্ত্রণ বর্হিবিশ্বে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেও একই ধরনের তথ্য দেওয়া হয়েছিল। পুয়ের্তো রিকো থেকে এই বার্তা পাঠানো হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করেছেন, সেই বার্তার আধুনিক সংস্করণ নাসার তরফে পাঠানো হচ্ছে। তবে বর্হিবিশ্বে এই সাংকেতিক বার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্তকে বিজ্ঞানীদের একাংশ মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তাঁরা মনে করছেন, এই সাংকেতিক আমন্ত্রণ পাঠানোর ফল পৃথিবীর জন্য মারাত্মক হতে পারে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিউচার অফ হিউম্যানিটি ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যান্ডার্স স্যান্ডবার্গ জানিয়েছেন, ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের সম্পর্কে অনেকেই গুরুত্ব দেন না। কিন্তু ভিনগ্রহের বাসিন্দা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। তাই এই আমন্ত্রণ বার্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এই সাংকেতিক আমন্ত্রণ বার্তা পাওয়ার পর যে ভিনগ্রহের বাসিন্দারা চুপ করে বসে থাকবে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাশাপাশি অক্সফোর্ডের অন্য এক গবেষক টবি অর্ডের মতে, কোন ধরনের ভিনগ্রহের বাসিন্দারা এই বার্তা পাচ্ছেন তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। একথা ভুলে গেলে হবে না, ভিনগ্রহের সভ্যতা ওতটা সভ্য নাও হতে পারে। বিজ্ঞানীরা একাংশ মনে করছেন, পৃথিবীর সম্পর্কে, মানুষের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে। এতে ভিনগ্রহের প্রাণীরা চাইলে সহজেই পৃথিবীর ও পৃথিবীর মানুষের ক্ষতি করতে পারবে।