ফের শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াল ভারত, ৩০ লক্ষ মানুষকে সহায়তা রাষ্ট্রসঙ্ঘের!

ফের শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াল ভারত, ৩০ লক্ষ মানুষকে সহায়তা রাষ্ট্রসঙ্ঘের!

 কলম্বো:  প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া এবং প্রধানমন্ত্রী রনিলের ওপর পুরোপুরি আস্থা হারিয়েছেন শ্রীলঙ্কার মানুষ। বর্তমান সরকারের পত না হওয়া পর্যন্ত গোতাবায়ার প্রাসাদ ও প্রধানমন্ত্রী রনিলের বাসভবন বিদ্রোহীরা দখল করে রাখবেন। ১৩ জুলাই গোতাবায়া ইস্তফা দিচ্ছেন বলে সচিবালয় সূত্রের খবর। তীব্র আর্থিক এবং মানবিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা। ভারত ৩০ হাজার কোটি টাকা সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের কাছে হাত পেতেছে শ্রীলঙ্কা।  ওরা কতটা সহায়তা করবেন সেও নিশ্চিত নয়।

ভারতের প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত গণআন্দোলন থামবে না। বিদ্রোহী নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষর প্রাসাদ এবং প্ৰধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘ নাগরিকদের রোষ থেকে পালিয়ে বেঁচেছেন। গোতাবায়াকে শেষবার দেখা গিয়েছে কলম্বো বন্দরে। হাতে ব্রিফ কেস নিয়ে জাহাজে উঠতে দেখা গিয়েছে গোতাবায়াকে।
মনে করা হচ্ছে, গোতাবায়া দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে কোন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘও এখন অজ্ঞাতবাসে।

আগামী ১৩ জুলাই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন গোতাবায়া। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। গোতাবায়া এবং রনিল অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত প্রেসি়ডেন্টের প্রাসাদ ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের বাসভবন ছেড়ে নড়বেন না বিদ্রোহীরা। গোতাবায়া ইস্তফা দিলে পরিস্থিতি কোনদিকে গড়াবে তাই-ই দেখার। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে ভরসা জুগিয়ে ৩০ হাজার কোটির বেশি টাকা আর্থিক সহযোগিতা করেছে শ্রীলঙ্কাকে। বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার দরকার আরও হাজার হাজার কোটি টাকা। দেশে জ্বালানি নিই. রাজকোষে তীব্র টান পড়েছে। রাজকোষে আছে মাত্র ২৫০ লক্ষ বৈদেশিক মুদ্রা।

তবে গণবিদ্রোহ যেন হিংসাত্মক চেহারা না নেয় এব্যাপারে বিদ্রোহী নেতৃ্ত্ব নাগরিকদের উদ্দেশে আবেদন জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে পর্যটন ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার পর থেকে দ্বীপরাষ্ট্রে বাসিন্দাদের জীবনে দুর্দিন নেমে এসেছে। এর আগে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ভারসাম্য বজায় ছিল। বিশেষত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষ ভালোই ছিলেন। এছাড়া মধ্যবিত্তের সংখ্যাও বাড়ছিল।বিশ্বব্যাঙ্কের এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের কাছে ধার চেয়ে হাত পেতেছে শ্রীলঙ্কার শাসকপক্ষ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সতর্কতা, শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেওয়ার আগে বিবেচনা করে দেখা উচিত সেই অর্থের অপব্যবহার হবে কিনা। আদতে গোতাবায়া-রনিল জুটির দায়বদ্ধতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতাই এখন প্রশ্নের মুখে।

এদিকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার অসংখ্য মানুষ অনাহার-অর্ধাহারে রয়েছেন। দুবেলা খাবার জুটছে না। হাসপাতালে ওষুধ নেই। ইতিমধ্যে ৩০ লক্ষ নাগরিকের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিলেও বহু মানুষ এখন বিপদে পড়েছেন তীব্র মুদ্রাস্ফীতির ফলে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের অভিমত, এধরনের করুণ পরিণামের জন্যে দায়ী শ্রীলঙ্কার শাসকরাই। রাজাপক্ষ পরিবারের সরকার লাগাতারভাবে দুর্নীতি চালিয়েছে। দেশ পরিচালনায় ভুল নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, যার পরিণতিতে মানুষের প্রতিবাদ দাবানলের মতো ছড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight − 7 =