বৈষম্যহীনতা দিবস: নারীর ক্ষমতায়নে শক্তিশালী পদেক্ষেপ জাতিসংঘের

এবছর 'জিরো ডিসক্রিমিনেশন ডে' উপলক্ষ্যে ইউএনএইডস বিভিন্ন ক্ষেত্রে  নারী ও মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক সমস্যাগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এবং নারী ও মেয়েদের জন্য সমতা ও ক্ষমতায়নের প্রচারে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জোটবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ওয়াশিংটন: প্রতিবছর ১ মার্চ বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়, 'জিরো ডিসক্রিমিনেশন ডে' অর্থাৎ 'বৈষম্যহীনতা দিবস'। এই দিনটির তাৎপর্য হল, 'বৈষম্য' অর্থে এখানে একাধিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয় যা মূলত মানুষ ও মানবিকতার সঙ্গে যুক্ত। যেদিনটি লিঙ্গ বৈষম্য, জাতি-ধর্মের বৈষম্য সহ শারীরিক ও মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষ, এমনকি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের সঙ্গেও বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে মুক্ত সম্পর্ক স্থাপন করার গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহনকারী একটি দিন। এই লক্ষ্য সামনে ২০১৪ সালের ১ মার্চ দিনটি প্রথম উদযাপিত হয়। জাতিসংঘ এইডস(ইউএনএইডস) -এর নির্বাহী পরিচালক মিশেল সিডিবি সেবছর ২৭ ফেব্রুয়ারি বেইজিংয়ের একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে এই দিনটির সূচনা করেছিলেন।

যদিও ১লা মার্চ দিনটি 'বৈষম্যহীনতা দিবস' হিসেবে পালিত হয় মূলত মেয়ে ও মহিলাদের প্রতি বৈষম্য নিরসন এবং সম অধিকারের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে। সেক্ষেত্রে সমাজে তাঁদের জন্য সুযোগ এবং গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য নারীর অধিকার রক্ষা, তাঁদের শক্তিশালী বিকাশের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বৈষম্যমূলক আইনগুলি অপসারণ এবং সবার জন্য ন্যায় ও সাম্যতা নিশ্চিত করাও এই দিনটির লক্ষ্য। 

সেদিক থেকে ২০২০-র বৈষম্যহীনতা দিবসে এমন  বিষয়গুলির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে যে সমস্ত ক্ষেত্রে জরুরি পরিবর্তন প্রয়োজন। যেমন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণ, মানবাধিকার ও আইনের ক্ষমতায়ন, সমান কাজের সমান বেতন, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার অবসান, দ্বিধা বা দ্বন্দ্ব ছাড়াই যেকোনো ব্যাধিগ্রস্ত রোগীর স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ, সমানাধিকারের ভিত্তিতে ও নিখরচায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার সুবিধা প্রদান প্রভৃতি।

এবছর(২০২০) 'জিরো ডিসক্রিমিনেশন ডে' উপলক্ষ্যে ইউএনএইডস বিভিন্ন ক্ষেত্রে  নারী ও মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক সমস্যাগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এবং নারী ও মেয়েদের জন্য সমতা ও ক্ষমতায়নের প্রচারে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জোটবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

বর্তমানে বিশ্বে কিছু দেশ বৃহত্তর লিঙ্গ সমতার দিকে প্রশংসনীয় অগ্রগতি ঘটিয়েছে, তবুও নারী ও মেয়েদের প্রতি বৈষম্য এখনও সর্বত্র বিদ্যমান। বৈষম্যের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলি – যেমন উপার্জন ভিত্তিক, জাতি ভিত্তিক, অক্ষমতা ভিত্তিক, যৌন অভিমুখী বা লিঙ্গ পরিচয় ভিত্তিক এই ধরনের অধিকার লঙ্ঘনকারী বৈষম্যগুলি নারী ও মেয়েদের জন্য ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করে। অবশেষে এটাই বলা যায় যে লিঙ্গ বৈষম্য মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতাকে প্রভাবিত করে। অনেক দেশেই, মহিলা এবং মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন কার্যকর হয়েছে, কিন্তু নারীর মৌলিক অধিকার রক্ষা, ক্ষতি এবং অসম আচরণের বিরুদ্ধে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার আইনগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন হয়না। বিশেষত ভারতবর্ষের মত উন্নত দেশেও এটাই ভয়ংকর সত্যি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =