২০৩০ সালের মধ্যে আরও রুদ্র হবে প্রকৃতি, বাড়বে দুর্যোগের সংখ্যা! অশনি সঙ্কেত রাষ্ট্রপুঞ্জের

২০৩০ সালের মধ্যে আরও রুদ্র হবে প্রকৃতি, বাড়বে দুর্যোগের সংখ্যা! অশনি সঙ্কেত রাষ্ট্রপুঞ্জের

কলকাতা: ‘‘একদিন ঝড় থেমে যাবে৷ পৃথিবী আবার শান্ত হবে…’’৷ নচিকেতার গানের সুরে  শান্তির আশ্বাস মিললেও রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে আশঙ্কার মেঘ৷ পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ 

আরও পড়ুন- একদিন পরেই বছরের প্রথম আংশিক সূর্যগ্রহণ, দেখা যাবে কি ভারত থেকে?

রাষ্ট্রপুঞ্জের গ্লোবাল অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট (Global Assessment Report (GAR 2022)-এ বলা হয়েছে, গত ২০ বছরের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে প্রত্যেক বছর ৩৫০ থেকে ৪০০টি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব৷ যা গত তিন দশকের তুলনায় তিনগুণ বেশি। উদ্বেগ বাড়িয়ে রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ফি বছর কমকরে ৫৬০টি প্রাকৃতির বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে হবে নীলগ্রহের মানুষকে৷ সম্প্রতি United Nations Office for Disaster Risk Reduction-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দিনে আরও বাড়বে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব৷ দেখা দেবে খরা, বন্যা, তাপমাত্রা বৃদ্ধির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ৷ 

ক্রমবর্ধমান উন্নত প্রযুক্তির খেসারত আমাদের দিতে হয় অজান্তেই। পরিবেশে লাগাতার বাড়তে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড, মনোক্সাইডের মত গ্রিন হাউস গ্যাস অদৃশ্য শত্রুর মত আক্রমণ করে চলেছে এই বিশ্বকে। আর যার ফল স্বরূপ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। ১৯৯০-এর দশক থেকে ২০২২, এর  সময়ের মধ্যে একটু একটু করে অনেকটাই পাল্টেছে বিশ্বের সার্বিক জলবায়ু। আগামী দিনে তা আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে৷

রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল দুর্যোগের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষের উপলব্ধির অভাব৷ তাঁদের ধারণা সহজেই এই সকল দুর্যোগের মোকাবিলা সম্ভব। কিন্তু, এটা ততটাও সহজ বিষয় নয়৷ তাছাড়া সাময়িকভাবে অর্থনৈতিক এবং অদূরদর্শী উন্নয়নকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে এই সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে। দুর্যোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের এই  ‘উদাসীনতা’ মানবজাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ এমনটাই দাবি, রাষ্ট্রপুঞ্জের উপ মহাসচিবের। 

জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, সবথেকে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভেবে বিচার করা হলে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্রতার অন্ধকারে ডুববে ১০০.৭ মিলিয়ন মানুষ। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সকল দেশে জনসংখ্যা বেশি সেখানে দারিদ্রতার হারও বাড়বে বেশি৷ সেই তালিকায় রয়েছে ফিলিপিন্স, ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, পাকিস্তান এবং ভিয়েতনাম৷ 

আসু বিপদের পদধ্বনি শুনে রাষ্ট্রপুঞ্জের উপ–মহাসচিব আমিনা মহম্মদ বলেন, ‘‘কোনও দুর্যোগের মুখোমুখি হওয়ার আগেই আমাদের তা প্রতিরোধ করতে হবে। ধ্বংসযজ্ঞের জন্য অপেক্ষা করা যুক্তিযুক্ত নয়।”