নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারত’কে ‘সাপ রাজার দেশ’ বলা হয়ে থাকে। দুই থেকে তিন বছর আগে ভারতে মোট ২৮০ প্রজাতির সাপ এর অস্তিত্বর কথা জানা গেছিলো, এখন সেই সংখ্যা ছাপিয়েছে ৩০০কে। কিন্তু সমগ্র বিশ্বে প্রায় ৩,৪৫৮ প্রজাতির সাপের অস্তিত্বর কথা জানা যায়। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হয় সাপ বিশেষজ্ঞ মহলে। তাহলে এত বেশি সংখ্যক প্রজাতি থাকতেও কেন ভারতে’র এমন নামকরণ করা হল? এ সম্পর্কে জানতে দরকার সাপ নিয়ে আরও গবেষণা।
১৬ জুলাইকে বিশ্ব সাপ দিবস হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে। কেননা, সাপ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, তাই সাপ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান বাড়ানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে। এই ৩,৪৫৮ প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৬০০ প্রজাতিই বিষধর শ্রেণির অন্তর্গত। এর মধ্যে প্রধান চারটি হল ক্রেট, রাসেল ভাইপার, স্ব-স্কেল্ড ভাইপার এবং ভারতীয় কোবরা-এই চারটি প্রজাতির সাপকে সবচেয়ে বিষধর বলে মনে করা হয়। এখনো অনেক প্রজাতির সাপের অস্তিত্বর কথাই গবেষক মহলে অজানা, মনে করা হয় ভারতে আরও অনেক রকম প্রজাতির সাপের অস্তিত্ব আছে যা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। ভারতে বিগত ২বছরে ২০ প্রকারের সাপ এর খোঁজ মিলেছে, যার মধ্যে “সালাজার পিট ভাইপার” এর খোঁজ পাওয়া গেছে অরুণাচল প্রদেশ থেকে, এর নামকরণ করা হয়েছে হ্যারি পটার এর সালাজার স্লিথেরিন এর অনুকরণে। এছাড়াও আরও কয়েকটি অ-বিষধর সাপের অস্তিত্ব মিলেছে, এগুলি প্রায় ৭থেকে ৮ ফুট লম্বা, দ্রুত চলাচল করতে পারে এবং এদের রঙ সাধারণত হলুদে-কালো হয়ে থাকে।
সাপ বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে নানারকম অসুবিধার মুখে পড়ছেন, প্রযুক্তিগত কারণই হোক কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমস্ত বাঁধা সাপ প্রজাতিদের শ্রেণি বিভাজন করতে অসুবিধার সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত। “পশ্চিমঘাটে পাওয়া কুঁজওয়ালা পিট ভাইপার ও শ্রীলঙ্কায় পাওয়া ৬প্রকার সাপ একই শ্রেণীর যদিও সেগুলি লম্বায় কিছুটা ছোট”, জানান হিউম্যান সোসাইটি ন্যাশনালের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার সুমান্থ বিন্দুমাধব।
সাপের অভিযোজিত ছদ্মবেশ ধারণের ক্ষমতা এবং বিষ প্রয়োগের ক্ষমতা থাকলেও তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সর্বদা লড়াই করে চলতে হয়। বর্তমানে বনাঞ্চল সাফ করে বস্তি গড়ে ওঠায় সাপেদের থাকার জায়গা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে আবার এর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন, মানুষের বৈরিতা সাপেদের বেঁচে থাকাকে দিন দিন প্রশ্ন চিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে বেশ কিছু এনজিও ও কিছু সাধারণ মানুষ এই সাপ গুলির অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। “এদের মেরে ফেলার আগে, এদের বাঁচান, কেননা সাপ আমাদের জীব বৈচিত্র্যের অনেকটাই রক্ষা করে।“ বলেন, প্রাণী উদ্ধারক সজ্ঞীব নাগ।