এক দুই করে বাড়তে পারতে ১৬ হাজার। মাত্র দুমাসের মধ্যে গোটা বিশ্বের ৭৫ টি দেশে ১৬ হাজার মানুষকে আক্রান্ত করেছে করোনার মতোই আরও এক সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কি পক্স। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল। আর তাই এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করোনার মতোই মাঙ্কি পক্স নিয়েও এবার বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করল ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানিজেশন তথা হু। শনিবার সন্ধ্যায় এই প্রসঙ্গে হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল ট্রেন্ডস আধানম ঘেব্রিয়াসুস সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘মাঙ্কি পক্স বিশ্বজুড়ে চিন্তা বাড়াচ্ছে। আর তাই এই ভাইরাসকে রুখতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করা হল।’
উল্লেখ্য গত এক মাস ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি জরুরী কমিটি গঠন করে বিশ্বজুড়ে মাঙ্কি পক্সের পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। তাতেই দেখা গিয়েছে, মাত্র ২ মাসের ব্যবধানে বিশ্বের প্রায় ৭৫ টি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০০০ এরও বেশি। অন্যদিকে শরীরে উপসর্গ দেখা দিলেও এখনো পর্যন্ত সনাক্ত হননি এমন রোগীর সংখ্যা প্রায় হাজার দেড়েক। করোনার মতো এই ভাইরাসও অত্যন্ত সংক্রামক, ফলে ঝড়ের গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। যদিও এখনো পর্যন্ত ইউরোপের দেশগুলিতেই এই ভাইরাস সর্বাধিক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে তাও এশিয়া, আফ্রিকার বহু দেশেও ইতিমধ্যেই মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। বাদ যায়নি আমাদের দেশ ভারতও। গত সপ্তাহেই ভারতের কেরলে প্রথম মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সন্ধান মেলে। যদিও ইতিমধ্যে সেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে চার। আর তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শনিবার শেষমেষ এই ভাইরাস নিয়েও জরুরি অবস্থা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
প্রসঙ্গত এই মুহূর্তে হুয়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যে দেশগুলোতে এখনো পর্যন্ত মাঙ্কিপথ সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি কিংবা এখনো যে দেশগুলি এখনও এই ভাইরাস মুক্ত সেখানে আরো বেশি করে নজরদারি চালাতে হবে। অন্যদিকে যে সমস্ত দেশে ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস সংক্রামক হয়ে উঠেছে সেখানে রোগটি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। মাঙ্কি পক্স আসলে কি, এই রোগের উপসর্গ কি সেই সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ওয়াকিবহাল করতে হবে। এই কাজ সবার আগে শুরু করতে হবে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো দেশগুলোতে।
অন্যদিকে, যে সব দেশে মাঙ্কিপক্স এখনও সেভাবে ছড়াতে পারেনি, তাদেরকে বলা হয়েছে, দ্রুত আক্রান্তকে চিহ্নিত করতে হবে। যাতে করে সংক্রমণ বৃদ্ধি না পায় সেই বিষয়ে যাবতীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির খোঁজ পেলেই তাঁকে নিভৃতবাসে রেখে চিকিৎসা করার পরামর্শ দিয়েছে হু।