নিউ ইয়র্ক: উপসর্গহীন করোনা রোগী থেকে কতটা সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)৷ এই বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে মঙ্গলবার ‘হু’ তাদের মিডিয়া পেজে একটি লাইভ অনুষ্ঠান করে৷ যেটি মূলত ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব৷
সোমবার হু-এর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক মারিয়া ভন কেরখোভে জানিয়েছিলেন, উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। তাঁর মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই সরব হন বিজ্ঞানী মহলের একাংশ। তাঁদের দাবি, উপসর্গহীন রোগীদের থেকে সংক্রমণ কম হয়, একথা কখনই বলা যায় না। মঙ্গলবার নিজের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফের বক্তব্য পেশ করেন মারিয়া। তিনি বলেন, ‘‘আমার বক্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। মূলত দেখা গিয়েছে উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের শরীর থেকে নির্গত ড্রপলেটের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ায়৷ তবে যে সকল ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গ দেখা যায় না, তাদের থেকে কতটা সংক্রমণ ছড়ায়, তা সত্যিই বলা অসম্ভব৷ এর সঠিক উত্তর আমাদের কাছেও নেই৷’’
কিন্তু সোমবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মারিয়া জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন দেশে উপসর্গহীন করোনা রোগীদের নিয়ে একটা সমীক্ষায় করা হয়েছে৷ তাতে দেখা গিয়েছে, উপসর্গহীন করোনা রোগীদের থেকে অন্যদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার হার খুবই কম। মঙ্গলবারের প্রশ্নোত্তর পর্বে হু-এর হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রাম এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. মাইক রেয়ান বলেন, উপসর্গহীন রোগীদের থেকে কতটা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, সে বিষয়ে আরও অনেক কিছু জানার আছে৷ এই বিষয়টা এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত যে সংক্রমণ ঘটছে, কিন্তু প্রশ্ন হল কতটা?’’
উপসর্গহীন রোগীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়টি হল, যেহেতু এদের দেখে কিছু বোঝা যায় না, তাই সঠিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বাধা তৈরি হয়৷ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিডিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত মোট রোগীর ৩৫ শতাংশের ক্ষেত্রে কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না।
সোমবার মারিয়ার বক্তব্যের পর যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, তা দূর করতে একটি টুইটও করেছিলেন তিনি৷ সেখানে মারিয়া বলেন, “উপসর্গহীন রোগীদের থেকে ঠিক কতজন সংক্রমিত হয়েছেন বলা মুশকিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হু-এর সদস্য দেশগুলি যে সমীক্ষা চালিয়েছে, তাতে জানা যায়, উপসর্গহীন রোগীদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর হার কম।” তিনি আরও জানান “মাত্র দু-তিনটি দেশে এই সমীক্ষা করা হয়েছে৷ তাতে যে ফলাফল দেখা গিয়েছে, সে কথাই বলেছিলাম। হু-এর পলিসির কথা আমি বলিনি।”