ধরুন, আপনি সপরিবারে বেরিয়েছেন৷ দিন সূর্যের আলোয় ঝলমলে। মাথার ওপর মেঘের ‘ম’-ও নেই। আচমকাই বিনা মেঘে বজ্রপাত। হুড়মুড়িয়ে নামল বৃষ্টি। আপনি কী করবেন? সঙ্গে ছাতা থাকলে কোই বাত নেই। সব্বাইকে নিয়ে নিমেষে ছাতার তলায়। আর ছাতা যদি না থাকে! আশেপাশে দেখবেন, কোথায় একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই রয়েছে। যার নীচে দাঁড়ালে অন্তত ‘কাকস্নান’ হওয়া ঠেকাতে পারবেন। জানেন, আপনার এই পথে হেঁটেই বৃষ্টি থেকে ছানাপোনাদের নিয়ে নিজেদের বাঁচিয়েছে কলম্বিয়ার দক্ষিণ ক্যারোলিনা চিড়িয়াখানার গোরিলা বাহিনী!
তাহলে গোড়া থেকে জানুন, ঠিক কী হয়েছে। রোজের মতোই দিনের আলোয় খুদে গোরিলাদের নিয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জনে মেতেছিল আকাকিয়া, ম্যাকি, কাজি আর তাদের দুই ছানা মো, জাকোটা। দিনের আলো গায়ে মেখে চিড়িয়াখানার বাগানে দিব্য জমে উঠেছিল তাদের খেলা। সঙ্গে অবশ্যই পাহারায় ছিল পুরুষ সঙ্গী সিলভারব্যাক গোরিলা সেনজো। আচমকাই, বৃষ্টি এল ঝেঁপে। সঙ্গে সঙ্গে হুটোপুটি থামিয়ে তিন পূর্ণবয়স্ক গোরিলা দে দৌড় চিড়িয়াখানার ভেতরে। নিজেদের খাঁচায়।
শুধু কি তাই? একদম আপনার-আমার মতো করেই আকাকিয়া, ম্যাকি আর কাজি একে একে কখনও হাল্কা দৌড়ে, কখনও পা টিপে পৌঁছে গেল স্বস্থানে। দুই সন্তান মো আরজাকোটাকে বুকে চেপে। শুধু নিজেদের নয়, ছানাদের গায়েও যাতে বৃষ্টির জল না লাগে সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল মায়েদের! মজার তখনও বাকি। হোক না গোরিলা পরিবার, সেখানেও তো একজন কর্তা থাকেন! এখানে সেই ভূমিকা অক্ষরে অক্ষরে পালন করল সেনজো। মহিলা এবং শিশু গোরিলারা যতক্ষণে না জায়গামতো পৌঁছোলো ততক্ষণ সে ঠায় দাঁড়িয়েরইল! সবাই ভালোভাবে পৌঁছোনোর পরে তবে সে ভারিক্কি চালে গেল স্বস্থানে।
ইতিমধ্যেই চিড়িয়াখানার কর্মী ব্রুকহানসিঙ্গার পুরো ঘটনার ভিডিও তুলে আপলোড করেছেন ফেসবুকে। তারপরেই দেখতে দেখতে গোরিলা পরিবারের এই ‘দুষ্টুমিষ্টি গপ্পো’সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। লাইক আর কমেন্টে উপচে পড়ছে ইনবক্স। কেউ কমেন্ট করেছেন, ‘দেখেছো, কত যত্ন করে সন্তানদের বুকে চেপে নিয়ে যাচ্ছে মায়েরা!’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘সেমজোর কর্তব্য জ্ঞানটা একবার ভাবো! দায়িত্ব নিয়ে সবাইকে পৌঁছে তারপর সে গেল! মানুষের থেকে কোনও অংশেই দেখি এরা কমতি নয়!’ হবে না কেন বলুন?এরা যে আমাদেরই পূর্বপুরুষের একটি প্রজাতি!