অবাক কাণ্ড! পুতিনের মল-মুত্রও সংগ্রহ করতে হয় তাঁর দেহরক্ষীদের?

অবাক কাণ্ড! পুতিনের মল-মুত্রও সংগ্রহ করতে হয় তাঁর দেহরক্ষীদের?

মস্কোঃ বছর খানেক আগে শোনা গিয়েছিল উত্তর কোরিয়ার শাসক প্রধান কিম জং উন নিজের দেশ ছেড়ে বিশ্বের যেখানে যেখানে যান সেখানে সেখানেই তাঁর সঙ্গে যায় তাঁর ব্যক্তিগত ব্যবহৃত একটি কমোড। এমনকি ওই কমোডের সমস্ত বর্জ্য পদার্থ আবার তাঁর সঙ্গেই দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। এবার এমনটাই শোনা গেল রাশিয়ার রাষ্ট্র কিম জং উনের ক্ষেত্রেও। জানা যাচ্ছে, বিদেশ সফরে গেলে রুশ প্রেসিডেন্টের বর্জ্য অর্থাৎ মলমূত্র সংগ্রহ করে নেওয়া হয়। সেগুলো মস্কো পর্যন্ত বয়েও আনা হয়। সম্প্রতি এমনই আজব দাবি করেছে ফরাসি নিউজ ম্যাগাজিন ‘প্য়ারিস ম্যাচ’। তাদের এই অদ্ভুত দাবিকে আবার ইতিমধ্যেই সমর্থন করেছে অন্যান্য বহু সংবাদমাধ্যম।
 

ফরাসি ওই ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, প্রতি বিদেশ সফর এই রুশ প্রেসিডেন্টের মলমূত্র সংগ্রহ করেন তার নিরাপত্তারক্ষীরা। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আসছেন পুতিন। তিনি বিদেশে গেলেই নাকি তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা এই কাণ্ড করেন। বিশেষ প্যাকেটে মলমূত্র সংগ্রহ করে সুটকেসে তা ভরে ফেরত আনা হয় মস্কোয়। এর পিছনে কী কারণ সেকথা বলতে গিয়ে ডিআইএ’র প্রাক্তন গোয়েন্দা অফিসার রেবেকা কফলারের বক্তব্য, ‘পুতিনের ভয়, বিদেশি গোয়েন্দারা সব সময় লক্ষ রাখে কী করে পুতিনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও না কোনও তথ্য জোগাড় করা যায়। কিন্তু পুতিন চান এমন ইমেজ তৈরি করতে যা থেকে মনে হয় পুতিন অদূর ভবিষ্য়তেও রাশিয়ার শাসক থাকবেন।’ এছাড়াও মনে করা হচ্ছে, যাতে তাঁর বর্জ্য থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতেও এমন করা হয়।

ওই প্রতিবেদনেই আরও বলা হয়েছে, যেকোনো বিদেশ সফরে পুতিনের মলমূত্র সংগ্রহের দায়িত্বে থাকেন ফেডারেল প্রটেকশন সার্ভিস। রাশিয়ার যেকোনো ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে এই সংস্থা। এই সংস্থারই একজন এজেন্ট সংগ্রহীত সমস্ত মূল মলমূত্রের প্যাকেটের উপর কড়া নজর রাখেন এবং সেটি স্যুটকেসে করে রাশিয়ায় ফেরত নিয়ে আসার দায়িত্ব পালন করেন। ওই রিপোর্টে আরও লেখা হয়েছে যে ২০১৭ সালের ফ্রান্স সফর, ২০১৯ সালের সৌদি আরব সফরে একইভাবে প্রতিদিন পুতিনের মলমূত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর সঙ্গেই প্রকাশিত হয়েছে একটি ভিডিও যেখানে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ সালের ফ্রান্স সফরের সময় ৬ জন নিরাপত্তারক্ষী পুতিনকে এস্কর্ট করে বাথরুমে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে একজনকে পরে সুটকেস হাতে বাথরুমের বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছিল।

অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আবহে ইতিমধ্যে একাধিক বার সামনে এসেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের অসুস্থতার খবর। কখনও শোনা গিয়েছে পুতিনের স্মৃতিভ্রষ্ট হয়েছে, কখনও আবার প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে পুতিনের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর। যদিও এই সমস্ত দাবিকেই মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রী। সম্প্রতি তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘পুতিনের কোনও শারীরিক সমস্যা নেই। আমার মনে হয় না মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ তাঁর শরীরে রোগের কোনও উপসর্গ খুঁজে পাবেন। আগামী অক্টোবরে ৭০ বছরে পা দেবেন তিনি। রোজই জনসমক্ষে আসেন পুতিন। আপনারা তাঁকে টিভিতে দেখতে পাবেন। তাঁর ভাষণ শুনতে পাবেন।’

তবে রাশিয়ার নেতা-নেত্রীরা যাই বলুন না কেন। পুতিনের মলমূত্র সংগ্রহের তথ্যের ব্যাপারে কার্যত কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে এই ফরাসি সংবাদমাধ্যম। ইতিমধ্যেই আরব, ভিয়েনা, ইউক্রেনসহ বহু দেশ থেকে এই সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়েছে বলে খবর। যার ওপর ভিত্তি করে যা জানা যাচ্ছে তাতে একথা স্পষ্ট যে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখতে বিদেশ সফরে পুতিনের মল  সংরক্ষণ করে রাখা হয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 4 =