ফার্স্ট লেডি হয়েও ছাড়ছেন না শিক্ষকতা! মার্কিন মুলুকে ইতিহাস গড়ছেন জিল বাইডেন

ফার্স্ট লেডি হয়েও ছাড়ছেন না শিক্ষকতা! মার্কিন মুলুকে ইতিহাস গড়ছেন জিল বাইডেন

ওয়াশিংটন: ৪৬ তম মার্কিন  প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। মার্কিন মুলুকে তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট ছিল নাটকীয়তায় মোড়া। সাম্প্রতিক সময়ে তাই এই শপথ গ্রহণের তাৎপর্য অসীম।

জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের সঙ্গে মার্কিন মুলুকের ফার্স্ট লেডি হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ডঃ জিল বাইডেন। তবে ফার্স্ট লেডি হিসেবে নিজের দায়িত্বের পাশাপাশি পুরোনো কাজকেও ভুলে যাচ্ছেন না তিনি। ডঃ জিল বাইডেন এডুকেশনাল লিডারশিপে একজন ডক্টরেট। তিনি আমেরিকার নর্দার্ন ভার্জিনিয়া কমিউনিটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। এমনকি লেখালেখিও করে থাকেন। মার্কিন মুলুকের ফার্স্ট লেডি হয়ে পুরোনো সেই পেশাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন না তিনি। শিক্ষকতা, লেখালেখি দুই’ই চালিয়ে যাবেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি ডঃ জিল বাইডেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়কালে সেকেন্ড লেডি পদে নিযুক্ত ছিলেন জিল বাইডেন। সে সময়ও নর্দার্ন ভার্জিনিয়া কমিউনিটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন তিনি। কিন্তু ফার্স্ট লেডি হয়ে যাওয়ার পরেও পুরোনো পেশাকে আঁকড়ে আছেন, এমন দৃষ্টান্ত আমেরিকায় বিরল। এদিন তাঁর মুখপাত্র মাইকেল লারোসা বলেন, “ডঃ বাইডেন নর্দার্ন ভার্জিনিয়া কমিউনিটি কলেজে শিক্ষকতা চালিয়ে যাবেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর দায়িত্বকে তিনি এর থেকে স্বতন্ত্র রাখবেন।”

ফার্স্ট লেডি হয়েও পুরোনো পেশাকে আঁকড়ে আছেন, তৈরি করছেন ইতিহাস, কীভাবে দুই দিক সামাল দেবেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কাঁধ ঝাঁকিয়ে ৬৯ বছর বয়সী জিল বাইডেন জানান একে তিনি ইতিহাস হিসেবে দেখছেন না। সেকেন্ড লেডি হিসেবে একই কাজ তাঁর করা হয়ে গেছে। যদিও আমেরিকান সংবিধানে ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব শুধুই খাতায় কলমে, গুরুতর কোনো সাংবিধানিক দায়িত্ব তাঁর নেই, কিন্তু প্রেসিডেন্ট, হোয়াইট হাউস, কয়েক হাজার সাংবাদিক এবং সর্বোপরি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে ডঃ জিল বাইডেনকে।

ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে মার্কিন মুলুকে কম সমালোচনা হয় নি। ধেয়ে এসেছে বিদ্রুপও।কিন্তু সমস্ত বিরূপ সমালোচনার মুখেই শান্ত ও দৃঢ় জবাব দিয়ে গেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি। দেশ জুড়ে মেয়েদের সাফল্যকে মন খুলে স্বীকৃতি দেওয়ার আবহ তৈরিই তাঁর লক্ষ্য, জানিয়েছেন ডঃ জিল বাইডেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কথা দিচ্ছি, আমি আপনার প্রেসিডেন্ট হব, মার্কিন মুলুকে শুরু বাইডেন-অধ্যায়

কথা দিচ্ছি, আমি আপনার প্রেসিডেন্ট হব, মার্কিন মুলুকে শুরু বাইডেন-অধ্যায়

ওয়াশিংটন: নভেম্বরের নির্বাচনেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বদলে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিয়েছিলেন আমেরিকাবাসী জনগণ। ডেমোক্রেটিক জো বাইডেন নির্বাচিত হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। কিন্তু নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরও ট্রাম্পের বিদায়ে ছিল মাস দেড়েকের অপেক্ষা।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে এল সেই দিন। ৪৬ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে শপথ গ্রহণ করলেন জো বাইডেন। এদিন বাইডেনের সঙ্গেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে শপথ গ্রহণ করেন কমলা হ্যারিসও।শপথ গ্রহণের পর দু’জনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেন। তাঁদের হাত ধরে এদিন কার্যত এক নতুন যুগের সূচনা হল মার্কিন মুলুকে।

শপথ গ্রহণের পর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নিজের ট্যুইটার অ্যাকাডেমি থেকে আমেরিকাবাসীর উদ্দেশ্যে লেখেন, “আপনাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে পারা আমার কাছে সম্মানের। দেশের সেবায় আমি তৈরি।” ট্যুইট করেন জো বাইডেনও। পুরোনোকে আরো ভালো করে গড়ে তোলার ডাক দেন তিনি। এবার থেকেই আসল কাজ শুরু, জানান তিনি।

বস্তুত, গত কয়েকদিন ধরে মার্কিন মুলুকে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, তা সাম্প্রতিক সময়ের বিচারে অন্যতম নাটকীয় রাজনৈতিক পালাবদল রূপে চিহ্নিত হতে পারে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমাগত বিরোধিতা, সর্বোপরি মার্কিন ক্যাপিটলে কিছুদিন আগে দুষ্কৃতীদের হামলা বাইডেনের অভিষেকের পথে বিঘ্ন স্বরূপ। এদিন শপথ গ্রহণের পর তাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বার্তা, “গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।”

বলা বাহুল্য, বাইডেনের প্রেসিডেন্ট পদে অভিষেককে কেন্দ্র করে এদিন মার্কিন কংগ্রেস ভবন তথা ক্যাপিটলকে মুড়ে ফেলা হয়েছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায়। ২৫০০০ জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী এদিনের অনুষ্ঠান পাহারা দিয়েছে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রত্যেক বার যে লক্ষ লক্ষ সাধারণ দর্শক উপস্থিত থাকেন, এবছর করোনা অতিমারীর কারণে সেই ট্র্যাডিশনে ছেদ পড়ে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়কালে আমেরিকাবাসী যে বিবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তা ঘোচানোর বার্তা দিয়ে এদিন বাইডেন বলেন, “আমি কথা দিচ্ছি, আমি সকলের প্রেসিডেন্ট হব।” এমনকি যাঁরা তাঁকে ভোট দেন নি, তাঁদেরকেও সমান চোখে দেখার কথা বলেন তিনি। এদিন বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন এবং জর্জ ওয়াশিংটন বুশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *