নিউইয়র্ক: করোনা সংক্রমণ বিশ্ববাসীর মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। অথচ এখনও কোভিড ১৯ ভাইরাসের প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। তবে করোনা প্রতিরোধে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে যে মাতামাতি শুরু হয়েছিল, ফ্রান্সে একদল গবেষক থেকে শুরু করে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টও যে ওষুধটিকে 'গেম চেঞ্জার' বলেছিলেন, তা ব্যবহারে এবার সতর্ক করল আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। এমনকী, মার্কিন মুলুকের একদল গবেষক দাবি করেছেন, ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রয়োগে করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর ঝুঁকি উল্টে বেড়েছে।
হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন প্রয়োগে সতর্কবার্তা এফডিএ-এর। এখনও পর্যন্ত মেলেনি প্রতিষেধক। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিশনার স্টিফেন এম হান জানিয়েছেন, 'এই পরিস্থিতিতে এটা স্পষ্ট যে, স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্যই বিকল্প উপায় খুঁজছেন। তবে সেই ক্ষেত্রেও যাতে কোনও ক্রুটি না দেখা যায়, তার জন্যই আমরা ওষুধটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জানিয়ে রাখছি।'
এফডিআই দাবি করেছে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধটি ব্যবহারে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে রোগীর। তাই 'যে ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে, সেগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আমাদের মাথায় রাখতে হবে', বলে জানিয়েছেন স্টিফেন এম হান। কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস হৃদরোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ বিপজ্জনক বলেই জানিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অন্তর্ভুক্ত ভেটেরানস হেলথ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ভিএইচএ) ও আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ও ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকরাও তাঁদের পরীক্ষায় লক্ষ্য করেছেন, এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে এমন রোগীর মৃত্যুর হার তুলনামূলক বেশি।
এর আগে ফ্রান্সের একদল গবেষক জানিয়েছিলেন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এই চিকিৎসায় ইতিবাচক ফল দিয়েছে। তবে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-এর কম্বো আরও বেশি কার্যকরী বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়ও শোনা গেছে একই সুর। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধই যে এই ভাইরাস রুখতে 'গেম চেঞ্জার'-এর ভূমিকা নিতে পারে, তা জানিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'আমরা খুবই ভাল ফল পেয়েছি। আশাকরি, আমরা ওই ড্রাগ শিগগিরই সহজলভ্য হবে।' তবে প্রেসিডেন্টের 'গেম চেঞ্জার' হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন প্রয়োগেই সতর্কবার্তা সেই দেশেরই স্বাস্থ্যসংস্থা।