ইতিমধ্যেই বিশ্বের একাধিক দেশে নতুন করে প্রাদুর্ভাব ঘটেছে করোনা মহামারীর। যত দিন যাচ্ছে ততই আরও জোরালো হচ্ছে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের সম্ভাবনা। এমতাবস্তায় মাথাচাড়া দিল আরও এক নতুন বিপদ। নাম মাঙ্কিপক্স। কয়েকদিন আগে শোনা যায়, এই মারাত্মক ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন আমেরিকার এক ব্যক্তি। ইতিমধ্যেই তাঁর নমুনায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। আর তাতেই এই ভাইরাস যাতে বাকিদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও হয়তো শেষ রক্ষা হল না। সম্প্রতি জানা যাচ্ছে আমেরিকায় আরও এক ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে শুধু আমেরিকা নয় জানাজাত ইতিমধ্যেই স্পেন-পর্তুগালের মতো একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এই দুই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে ৩২-এ। আক্রান্তদের অধিকাংশেরই অবস্থা বেশ সংকটজনক বলে খবর।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে আমেরিকায় যে ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি কয়েক দিন আগে কানাডা থেকে ফেরেন। যদিও বলা হয় মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের আঁতুড়ঘর আফ্রিকা এবং আফ্রিকা নাইজেরিয়া থেকেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম ছড়াতে শুরু করে। কিন্তু সম্প্রতি আক্রান্ত এই ব্যক্তির সঙ্গে আফ্রিকার কোনও যোগ নেই বলেই খবর। হাসপাতাল সূত্রে খবর ফেরার পর থেকেই ওই ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, সঙ্গে অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণা। এছাড়াও তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মাংসপিণ্ড গজাতে শুরু করলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করালে জানা যায় তিনি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত। এরপরেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য তৈরি হয়েছে মেডিকেল টিম। সাথে ওই ব্যক্তির সাথে বিগত কয়েক দিন যারা সংস্পর্শে ছিলেন তাদেরও স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে নজরে রাখা হয়েছে বলে খবর। তবে সব থেকে ভয়াবহ বিষয় হল মন্ট্রিলের স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে জানানো গিয়েছে ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা এমন আরও ১১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের শরীরেও ছোট ছোট মাংসপিণ্ড তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁদেরও পরীক্ষা করা হতে পারে বলে খবর।
অন্যদিকে স্পেন-পর্তুগালে এই ভাইরাস মারাত্মক আকারে ছড়াতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এই দুই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩২ হয়েছে। আমেরিকা, স্পেন, পর্তুগাল ছাড়া ব্রিটেনেও একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। ফলে শুধু আমেরিকা নয় বলতে গেলে গোটা বিশ্বজুড়েই নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে মাঙ্কিপক্সের আতঙ্ক। যদিও চিকিৎসকসহ সূত্রের খবর এই ভাইরাসে মৃত্যুর সম্ভাবনা মাত্র ১০ শতাংশ। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছেন এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতাও করোনার তুলনায় অনেকটাই কম। কিন্তু তারপরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না কেউই। করোনা আবহে যদি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায় তাহলে যে কি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে সে কথা আঁচ করতে পেরেই ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকেও বিশ্ববাসীকে সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে এবং এই বিষয়ে তারা একটি জরুরী বৈঠক ডাকতে পারে বলেও খবর।