ওয়াশিংটন: নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মানব সভ্যতা আধুনিকতার যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে সেখানে বন্যপ্রাণীদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১০০টি মূল্যবান প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রকৃত অর্থে যে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি হয়ে উঠছে তা বিশ্বের শিক্ষিত সমাজের কাছে অজানা নয়। তবুও সব জেনে শুনেই শুধুমাত্র বিলাসবহুল জীবনযাপনের তাগিদে দায়িত্বজ্ঞান বিসর্জন দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। অদূর ভবিষ্যতে এই বন্যপ্রাণীকুলের প্রতি এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই যে মানবসভ্যতা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে সেই হুঁশিয়ারিও বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই দিয়ে আসছেন পরিবেশবিদরা। গবেষণায় উঠে আসছে, বিগত ৪০ বছরে পাখি, মাছ, স্তন্যপায়ী প্রাণী, উভচর এবং সরীসৃপ সবমিলিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০% হ্রাস পেয়েছে। জীববৈচিত্র্য হ্রাস একটি গ্রহের সঙ্কট, যার সমাধান করতে হবে।
এবছর(২০২০) বিশ্ব বন্যজীবন দিবস বা 'ওয়াইর্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ডে' উপলক্ষে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি তিজানি মুহাম্মদ-বন্দে বিশ্বের মানুষের কাছে এই বার্তাই দিয়েছেন যে “এমন একটি ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রাম করার প্রতিশ্রুতি দিন যেখানে জীব বৈচিত্র্যের সদব্যবহার এবং সংরক্ষণের প্রচেষ্টা আমাদের সকলের জন্য আরও উন্নত বিশ্ব গড়তে সহায়তা করে।” “আগামীকাল, ৩ মার্চ আসুন, আসুন আমরা সকলেই আমাদের সুন্দর বন্যজীবন উদযাপন করি এবং পৃথিবীর সমস্ত জীবন বজায় রাখতে সক্ষম এমন একটি বিশ্বের দিকে এগিয়ে চলি।”
তাই ২০২০-র 'ওয়াইর্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ডে'র মূল ভাবনা বা থিম হল “সাসটেইনিং অল লাইফ অন আর্থ” অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্যের মূল উপাদান হিসাবে সমস্ত বন্য প্রাণী এবং উদ্ভিদ প্রজাতিকে অন্তর্ভুক্ত করে “পৃথিবীতে সমস্ত জীবন বাঁচিয়ে রাখা।”
Just one week to go until #WorldWildlifeDay!
On 3 March, help us raise awareness of the immense value of a diverse #wildlife for people and planet: https://t.co/2HEsOl0zye #WWD2020 #SustainingAllLife #WWD pic.twitter.com/6OfzWkcFhV
— World Wildlife Day (@WildlifeDay) February 25, 2020
বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদকূলের প্রতি গণসচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেনজারড স্পেসিস (সিআইটিইএস)-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের বন্য প্রাণী এবং গাছপালা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত সিআইটিইএস-এর ১৬তম সভায় প্রথমবার এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয় যে- আন্তৰ্জাতিক বাণিজ্য যাতে বন্য প্রজাতিদের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে হুঁশিয়ারি হয়ে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে হবে। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসের প্রস্তাব স্বাক্ষরিত হয়। এরপর এই ভাবনাকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে ২০১৩ সালে জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ সভায় ৩ মার্চ দিনটিকে 'বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস' হিসেবে ঘোষণা করার হয়।