পৃথিবীর বুক থেকে জঙ্গল কমে যাওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে৷ সম্প্রতি বিশ্ব উষ্ণায়নকে ঠেকাতে জঙ্গল বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা৷ তাঁরা বলছেন, উষ্ণায়ন ঠেকাতে ১৭০ কোটি হেক্টর জমিতে তিন লক্ষ কোটি গাছ লাগানো হলে তবেই মিটবে সমস্যা৷ কিন্তু বিজ্ঞানীদের এমন পরামর্শ দেওয়ার কুড়ি বছর আগেই ব্রাজিলের ইনস্টিট্যুটো টেরা নামে এক মালভূমিতে বৃক্ষরোপনের পদক্ষেপ ছিলেন ব্রাজিলের দম্পতি৷ এখন তাঁদের উদ্যোগেই সেই মালভূমিতে গড়ে উঠেছে ঘন জঙ্গল৷ আজ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী তাদের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে৷
ব্রাজিলিয়ান এই দম্পতির নাম সেবাস্তিয়াও সালগাদো ও লেলোয়া ডেলুইজ ওয়ানিক৷ সেবাস্তিয়াও চিত্রসাংবাদিক হলেও পরিবেশপ্রেমী৷ বিশ্ব বিখ্যাত ব্রাজিলীয় এই চিত্রসাংবাদিক ছোটবেলায় অরণ্যের কাছাকাছি থাকতেন৷ কাজের শুরুতে বহুদিন বাইরে থাকার পর দেশে ফিরে তার পরিচিতি এই বনাঞ্চল দেখে হতাশ হন৷ কারণ এতদিনে উজার হয়ে গিয়েছে সেই বন৷ সেখানে বসবাসকারী প্রাণীর সংখ্যা কমে গিয়েছে৷ কিন্তু কেন এমন অবস্থা? তা নিয়ে সেবাস্তিয়াও বলেন, এর জন্য তাঁর পরিবারই দায়ী৷ পারিবারিক ও অর্থনৈতিক কারণে এলাকার বিভিন্ন গাছ কেটে ফেলা হয়েছে৷ অররাধ বোধে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি৷ এরপর স্ত্রীকে নিয়ে বনাঞ্চল পুনরুদ্ধারে নামেন৷ নেন শপথ৷ দীর্ঘ কুড়ি বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ফের তাঁর পরিচিত বনাঞ্চলকে ফিরে পান৷
তিনি যখন দেশে ফেরেন, তখন সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল৷ মাত্র ৭ শতাংশ জমিতে গাছ ছিল৷ এরপর সেখানে বৃক্ষরোপন শুরু করেন তাঁরা৷ একে একে কুড়ি লক্ষ গাছ লাগান ওই দম্পতি৷ গাছ ধীরে ধীরে কীটপতঙ্গ, পশু-পাখি ফিরে আসতে শুরু করেছে৷ ওই জঙ্গল রক্ষায় একটি সংস্থাও তৈরি করেছেন তিনি৷ ওই সংস্থার মাধ্যমে চার লক্ষ গাছ রোপন করা হয়েছে জঙ্গলে৷ এই মুহূর্তে ১৭২ প্রজাতির পাখি, ৩৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৯৩ প্রজাতির গাছ ও ১৫ প্রজাতির সরীসৃপ বসবাস করছে৷