টোকিও: আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপ আর ভারতের মতো দেশের তালিকায় এবার ঢুকে পড়ল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি৷ এই প্রথম মঙ্গলের পথে পা বাড়ল তৈল সমৃদ্ধ এই দেশের তৈরি মহাকাশযান৷ লালগ্রহের আবহাওয়ার হদিশ পেতে সোমবার জাপান থেকে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ করা হল মানবহীন মহাকাশযান ‘হোপ’৷
জাপানি রকেটে চেপে মঙ্গলের পথে পাড়ি জমায় এই মহাকাশযান৷ মঙ্গলের আবহাওয়ার হালহকিকত জানতে প্রায় পাঁচশ মিলিয়ন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিল সে৷ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এর আগে দু’বার প্রস্তুতির পরেও উৎক্ষেপণ স্থগিত করতে হয়েছিল। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছবে ‘হোপ’৷ যা কাকতালীয়ভাবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। এই মিশনের বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান সারাহ আল হামিরি মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণের পর স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের ওপর এর প্রভাব অনেকটা ৫১ বছর আগে আমেরিকার চাঁদে পা রাখার মতো। উল্লেখযোগ্যভাবে সেই দিনটিও ছিল ২০শে জুলাই৷’’ এক সাক্ষাৎকারে হামিরি আরও বলেন, ‘‘এটা ভেবে ভালো লাগছে যে, আজ আরবের শিশুরা ঘুম থেকে উঠে এই অভিযানের কথা শুনবে৷ এটা তাদের কাছে এক নতুন বাস্তবতা৷ এই অভিযান তাদের উদ্বুদ্ধ করবে৷’’
এদিন স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৫৮ মিনিটে দক্ষিণ জাপানের তনেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে রকেটে চড়ে মঙ্গলের পথে পাড়ি দেয় আরবের তৈরি এই মহাকাশযান৷ পশ্চিম এশিয়ার কোনও আরব দেশ এ ব্যাপারে এতদিন আগ্রহ দেখায়নি৷ এ বার মঙ্গল অভিযানে নামল তারা৷ আরবি ভাষায় এই মঙ্গলযানটির নাম ‘আল আমাল’৷ রকেট প্রস্তুতকারক সংস্থা মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ জানিয়েছে, পরিকল্পনা মাফিক লঞ্চ ভেহিকল ট্রাজেক্টরি কার্যকর করা হয়েছিল৷ সফল ভাবেই এটি রকটে থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পেরেছে৷
এদিন মহাকাশযানের সফল উদ্বোধনের পরেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মহম্মদ বিন রশিদ স্পেস সেন্টারের ডিরেক্টর ইউসুফ হামাদ আলশাইবানী বলেন, ‘‘এই মিশন ইউএই-র জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ৷ এই মিশন দেশের হাজার হাজার তরুণকে উদ্বুদ্ধ করবে৷’’ এই মহাকাশযানের উৎক্ষেপনের আগে মিশন প্রজোক্ট ম্যানেজার ওমরান সরাফ বলেন, ‘‘এই মিশনের অনন্য বিষয়টি হল, এই প্রথম বিশ্বের বিজ্ঞানী মহল বিভিন্ন ঋতুতে দিনের বিভিন্ন সময়ে মঙ্গলের রায়ুমণ্ডলের খোঁজ পাবেন৷’’