বেজিং: লাদাখ সীমান্তের সংঘর্ষ নিয়ে চাপা উত্তেজনা এখনো বহাল দুই দেশে। একের পর এক আলোচনা হলেও এখনো পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো সমাধান বের করতে পারেনি ভারত এবং চিন সরকার। এরইমধ্যে চাঞ্চল্যকর খবর সামনে এসেছে। ৩৯ জন কর্মী নিয়ে দুটি ভারতীয় জাহাজ প্রায় নয় মাস ধরে আটকে রয়েছে চিনের বন্দরে! এই দুটি জাহাজই পণ্যবাহী, একটি প্রায় ছয় মাস ধরে এবং অন্যটি তিন মাস ধরে চিনের বন্দরে আটকে। যদিও চিনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণেই এমন ঘটনা।
বেজিং সরকার যাই বলুক না কেন, ভারতীয় ওই দুটি জাহাজের কর্মীদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে তাদের নিচে নামতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি জাহাজ ছাড়ার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে এখন তারা ভারত সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু বেজির সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মাবলী জন্যই এই দুটি জাহাজকে আপাতত সেখানে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোন দেশের করোনাভাইরাস নিয়মবিধি প্রায় নয় মাস ধরে চলে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই পারে। অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা নিয়ে আসছিল ভারতীয় দু’টি জাহাজ এমভি জগ আনন্দ এবং এমভি অনস্তেশিয়ায়া। জগ আনন্দ ১৩ জুন চিনের জিংট্যাং বন্দরে নোঙর করে। অন্য দিকে অনস্তেশিয়া ২০ সেপ্টেম্বর ভিড়েছিল কাওফেইডিয়ান বন্দরে। এখন ওই দুটি মালবাহী জাহাজ বন্দরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বিগত কয়েক মাস ধরেই। জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট কোন কারণ ছাড়া জাহাজ দাঁড় করিয়ে রাখার পাশাপাশি তাদের থেকে বন্দরের ভাড়া নিচ্ছে বেজিং সরকার। এই পরিস্থিতির মধ্যে দিন দিন জাহাজের ওষুধ এবং খাদ্যশস্যের কমতি দেখা দিতে শুরু করেছে। সবমিলিয়ে দুটি জাহাজের পরিস্থিতি নিয়ে এখনও উদ্বেগ ভারতের।
বিশেষজ্ঞদের মতে,লাদাখ সীমান্তের সংঘর্ষের কারণে এইভাবে দুটি ভারতীয় জাহাজকে নিজেদের ইচ্ছায় আটকে রেখে দিয়েছে বেজিং সরকার। ভারতের প্রতি স্রেফ বদলা নেওয়ার মনোভাবে এমনটা করা হচ্ছে। যদিও বেজিং সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্যই এত সময় লেগে যাচ্ছে। এর সঙ্গে লাদাখ সীমান্তে ঘটে যাওয়া দুই দেশের সংঘর্ষের কোন রকম সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র কোয়ারেন্টিন পদ্ধতি সম্পন্ন হওয়ার পরেই এই দুটি জাহাজকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে চিনের এই দাবি একেবারেই মানতে রাজি নয় নয়াদিল্লি। সুতরাং এই দুই জাহাজকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দুই দেশের মধ্যে।