ওয়াশিংটন: আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে একটি নতুন তথ্য সামনে এসেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন করোনায় আক্রান্তদের নির্জন গুয়ানতানামো দ্বীপে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এই তথ্য ফাঁস হতেই ফের বিতর্কের কেন্দ্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প৷
তাঁর এমন তুঘলকি শাসনের তথ্য ২৮ জুন প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা একটি বইয়ে রয়েছে। বইটির নাম ‘নাইটমেয়ার সিনারিও: ইনসাইড ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ’ বইটি লিখেছেন ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ইয়াসমিন আবু তালেব ও দামিয়ান প্যালেটা। বইটি তথ্যসমৃদ্ধ করতে হোয়াইট হাউসের তৎকালীন কর্মকর্তা সহ ১৮০ জনের বেশি লোকের সাক্ষাৎকার নিয়ে তা যুক্ত করা হয়েছে। বইয়ে ট্রাম্প প্রশাসন সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য আছে।
বইটি এখনও প্রকাশিত না হলেও, বইয়ের সূত্র ধরে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য হিলের প্রকাশিত প্রতিবেদনে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। খবরে সামনে এসেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসের ‘সিচুয়েশন’ রুমে করোনায় আক্রান্ত মার্কিন নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে কথা চলাকালীন ট্রাম্প উপস্থিত আধিকারিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের মালিকানায় একটা দ্বীপ আছে না? গুয়ানতানামো দ্বীপে আক্রান্তদের পাঠালে কেমন হয়?’ কুখ্যাত মার্কিন বন্দিশিবির হিসেবে পরিচিত গুয়ানতানামো দ্বীপের কথাই বলছিলেন ট্রাম্প। তিনি উপস্থিত আধিকারিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আমরা বাইরে থেকে ভাইরাস নয়, টাকা আমদানি করি৷’ ট্রাম্পের মুখে এহেন কথা শুনে হতবাক হয়ে যায় হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা। তাঁরা প্রেসিডেন্টের এই পরামর্শকে দ্রুতই উড়িয়ে দেন। ট্রাম্পের এই মনোভাব জনসমক্ষে এলে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে সাধারণ আমেরিকানদের মনে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।
এখানেই শেষ নয়৷ বইটিতে করোনা পরীক্ষা নিয়ে ট্রাম্পের হতাশার কথাও উল্লেখিত রয়েছে। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ ট্রাম্প তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যালেক্স এজারকে চিৎকার করে বলছিলেন, করোনার পরীক্ষা তাঁকে শেষ করে দিচ্ছে। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আরও বলেছিলেন, এত করোনা পরীক্ষা করার জন্য তিনি ভোটে হেরে যাবেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, কোন ‘ইডিয়ট’ ফেডারেল সরকারের সাহায্যে করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিল৷ করোনা পরীক্ষায় ফেডারেল সরকারের যুক্ত হওয়া উচিত নয়। ফেডারেল সংস্থা, সিডিসি করোনা আক্রান্তদের হিসাব রাখা নিয়েও অ্যালেক্সের কাছে বিরক্তি প্রকাশ করেন ট্রাম্প। ট্রাম্প চিৎকার করে বলায় ঘরের বাইরে অপেক্ষারত আধিকারিকরা স্পষ্ট সব কথা শুনতে পেয়েছিলেন।