দু’বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে সামাজিক দূরত্বের সময়সীমা, বলছেন গবেষকরা

দু’বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে সামাজিক দূরত্বের সময়সীমা, বলছেন গবেষকরা

ওয়াশিংটন:  করোনা সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণে আনতে একখ দুটি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছেন গবেষকরা। প্রথমেই স্যোশাল ডিস্ট্যান্সিং এবং অপরটি পর্যাপ্ত টেস্টিং। প্রথম ও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে একে অপরের সঙ্গে দুরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে লকডাউনের জেরে প্রায় গোটা বিশ্বের মানুষ এখন ঘরবন্দী। সবাই তাকিয়ে আছেন নিজের নিজের দেশের শাসকদের মুখের দিকে। একটিমাত্র ঘোষণা শোনার অপেক্ষায় কবে লকডাউন তুলে নেওয়া হবে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি ও গবেষণার গতিপ্রকৃতি সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে সমীক্ষা চালিয়ে এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন হার্ভার্ড টি.এইচ-এর মহামারীবিদরা। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এমনই এক গবেষণা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে 'ফোর্বস' সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।  প্রতিবেদন অনুসারে চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এর গবেষকরা বলছেন কার্যকরী চিকিৎসা ও উপযুক্ত ভ্যাকসিনের অভাবে এই 'স্যোশাল ডিস্ট্যান্সিং'-এর সময়সীমা দুবছর পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ কোভিড ১৯- এর সঙ্গে লড়াইটা ২০২২ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হতে পারে।

এপ্রসঙ্গে মূল বক্তব্যগুলি হল-

মঙ্গলবার ১৪ এপ্রিল প্রকাশিত এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে পরের কয়েক বছর ধরে ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সামাজিক দূরত্বের প্রয়োজন হতে পারে। গবেষকরা বলেছেন, ২০০৩ সালের সারস-এর প্রাদুর্ভাবের মতো এই প্রাথমিক মহামারীটির পরে কোভিড -১৯-এর কারণ সারস-কোভি -২ ভাইরাসটিও নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে কিনা তা নির্ধারণ করা কঠিন। এছাড়া, এমনটাও হতে পারে অন্যান্র সাধারণ করোন ভাইরাস ঘটিত ফ্লু-গুলির মতো এরপরেও প্রতি বছর শীতকালে সারস-কোভিড -২ এর সংক্রমণ হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, সারস-কোভ -২-এর প্রতিরোধ সম্পর্কে এখনও অনেক কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।  যদি ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা স্থায়ী না হয়, তবে সাধারণ ফ্লু যেভাবে নিয়মিত মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। এই ফ্লু-টিও ঠিক তেমনই একটি রোগে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। (ধারণা করা যায় তাহলে পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব সংকট দেখা দেবে) জাপানের মতো কিছু দেশে ইতোমধ্যে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশিকা শিথিল করার পরে সেখানে করোনা সংক্রামণের দ্বিতীয় বার ফিরে আসার অভিজ্ঞতা হচ্ছে। যদিও গবেষকরা আশাবাদী যে যদি এই রোগের কার্যকরী ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে স্যোশাল ডিস্ট্যান্সিংও খুব তাড়াতাড়ি শিথিল হবে।

জার্নালে গবেষকরা লিখেছেন, নতুন চিকিৎসা, ভ্যাকসিন বা অন্যান্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেমন সংক্রমণ হতে পারে এমন যোগসুত্র খুঁজে বের করা এবং কোয়ারানটাইন – এখন অনেক জায়গায় এটা বাস্তব মনে করা হচ্ছে না। কিন্তু এটাই বাস্তব মনে এভাবেই সংক্রমণের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই মহামারীর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরীক্ষা এবং দূরত্ব বজায় রাখাই কঠোরভাবে মেনে চলা সামাজিক দূরত্বের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করতে পারে।

জার্নালে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, কয়েকশোরও বেশি সংস্থা কোভিড-১৯ এর জন্য ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত। একটি ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে আসতে ১৮ মাস বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে, তবে কিছু চিকিৎসা যেমন হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন এবং রেমডেসিভিয়ার, ইতিমধ্যে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =