আজ বিকেল: স্যামুয়েল লিটল, এই নামটি শুনলেই মার্কিনিদের চোখের সামনে ভেসে উঠছে রক্ত। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, প্রায় শতাধিক খুনে রক্তাক্ত স্যামুয়েল লিটলের হাত। এই ঠান্ডা মাথার খুনি এখন ক্যালিফোর্নিয়ার জেলে বসে ছবি আঁকছে। না না কোনও ল্যান্ডস্কেপ নয়, রীতিমতো পোট্রেট। তার নৃশংস কীর্তির শিকার যাঁরা হয়েছেন সেই সব হতভাগ্য মহিলাদের ছবিই আঁকছে স্যামুয়েল। বছর ৭৯-র এই আসামী এবার ধীরে ধীরে স্বীকার করতে শুরু করেছে তার যাবতীয় পাপ কাজের খতিয়ান।
ওহায়ো-তে জন্ম স্যামুয়েলের খুনের কীর্তি তালিকা বেশ লম্বা। আমেরিকায় বিভিন্ন সময় খুন হয়ে যাওয়া মহিলাদের ছবিই আঁকছে সে। এতদিন এসব খুনের কিনারা করতে পারেনি পুলিশষ স্যামুয়েলকে জেলবন্দি করেও লাভ হয়নি। আচমকাই তার বোধোদয় হয়েছে, তাই ভিকটিমদের ছবি আঁকছে সে। নিজের মুখেও খুনের কারণ সম্পর্কে বিশদে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক মহিলার ছবি আঁকলেও মাত্র ৬০ জনের কেস হিস্ট্রি জানা সম্ভব হয়েছে। অনেক মহিলার ছবি আবার পুলিশের কাছেও নেই। গোয়েন্দাদের দাবি, স্যামুয়েল লিটলের খুনের হিসেবে ১০০ ছাড়িয়েছে। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে এই ভয়ঙ্কর খুনি যখন মুখ খুলেছে তখন ধীরে ধীরে যাবতীয় অপরাধের হিসেবে সে দেবে। এমনভাবেই একদিন কিনারা না হওয়া বহু খুনের হিসেব মিলিয়ে ফেলবে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ১৯৭০-২০০৫ এই সময়টাতেই সব থেকে বেশি খুন করেছে স্যামুয়েল। বেশ কয়েকবার পুলিশ তাকে ধরলেও প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দিতে হয়েছে। কোনওদিনই নিজের অপরাধ স্বীকার করতে চায়নি সে, শত মারধরেও মুখ খোলানো সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি টেক্সাসের এক মহিলা খুনের কিনারা করতেই তদন্তকারী অফিসাররা স্যামুয়েলকে জেরা করতে ক্যালিফোর্নিয়ার জেলে যান। সেখানে আচমকাই নিজের কুকীর্তির কথা বলতে শুরু করে স্যামুয়েল। সাধারণত মাদক নেওয়া, যৌনকর্মী এই ধরনের মহিলাকে শিকার বানাতো সে। মারধরের পর খুন করত, যাতে ঘটনাটি স্বাভাবিক দেখায়। গলার গড়নের উপরেই শিকার নির্ভর করত। একধরনের বিশেষ গলার অধিকারী মহিলাদেরকেই টার্গেট করত সে। এত দিন পর্যন্ত ‘গ্রিন রিভার কিলার’ গেরি রিগওয়েকেই দেশের সব চেয়ে সাংঘাতিক ধারাবাহিক খুনি হিসেবে জানত আমেরিকা। অন্তত ৪৯ জনকে খুন করেছিল গেরি। তবে সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে স্যামুয়েল।