আলাস্কা: প্রবল একটা ঝাঁকুনি৷ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল হাজার হাজার ঘর৷ ধ্বংসস্তুপের মধ্যে চাপা পড়ল লাখো মানুষ৷ সেই ভয়াল অভিজ্ঞতা যেন প্রতিদিন তাড়া করে বেরাচ্ছে তুরস্ক ও সিরিয়ার মানুষগুলোকে৷ বিপর্যয়ের ১১ দিন পরেও চলছে উদ্ধার কাজ৷ এখনও মিলছে প্রাণের হদিশ৷ বিপর্যয়ের দশম দিনে ধ্বংস স্তুপের আড়াল থেকে জীবিত উদ্ধার করে আনা হল এক মহিলা ও তাঁর দুই শিশু সন্তানকে৷
আরও পড়ুন- জুলি-রোমিওদের হাত ধরে কলকাতার সঙ্গে জুড়ে গেল তুরস্ক
জানা গিয়েছে ওই মহিলার নাম ইলা৷ এবং তাঁর দুই শিশু সন্তান হল মেইসাম ও আলি৷ একটি বিধ্বস্ত অ্যাপার্মেন্টের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁদের৷ তিনজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ তাঁদের চিকিৎসা চলছে৷ এদিকে, কাহরামানমারাস শহরে একটি ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করে আনা হয় বছর ৪২-এর এক মহিলাকে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনার ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, উদ্ধারের পর স্ট্রেচারে করে ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ ওই মহিলার নাম মেলিকা ইমামোগ্লু৷
লড়াইয়ের কাহিনি এখানেই শেষ নয়৷ তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পের ১১ দিন পর ধ্বংসস্তুপের মধ্যে থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে আনা হয়েছে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে৷ তার নাম আলায়না ওলমেজ৷ ধ্বংসস্তুপের নীচে ২৪৮ ঘণ্টা লড়াই চালানোর পর নতুন জীবন পায় সে৷ ওই এলাকায় এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। তবে নতুন করে কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা প্রায় নেই বললেই চলে৷ তবে হাল ছাড়তে নারাজ উদ্ধারকারীরা৷ এখনও তন্নতন্ন করে প্রাণের খোঁজ চালাচ্ছেন তাঁরা৷
এদিকে, আলায়নাকে এখন ‘অলৌকিক মেয়ে’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে৷ তাঁকে ধ্বংসস্তুপ থেকে বার করে আনার পরই উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘তিনি সুস্থ অবস্থায় আছেন বলে মনে হচ্ছে। তিনি চোখ খুলেছিলেন এবং বন্ধ করেছিলেন।” তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এখানে এক সপ্তাহ ধরে এই বাড়িটিতে কাজ করছি… এখনও কারও আওয়াজ শোনার আশায় আছি। … যখনই আমরা একটি জীবন্ত প্রাণের সন্ধান পাই – এমনকী একটি বিড়ালকেও যদি উদ্ধার করতে পারি, আমরা খুব খুশি হই।” তাঁকে উদ্ধার করার পরেই ধ্বংসস্তূপ থেকে নেসলিহান কিলিক নামে বছর তিরিশের এক যুবককে বের করে আনেন উদ্ধারকারীরা। জীবন্ত উদ্ধার হয়েছেন ১২ বছরের ওসমানও।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রবল ভূমিকম্প হয়৷ যা দুই দেশের সীমান্তবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। রিখটার স্কেলে পর পর দুটি ম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮ এবং ৭.৬৷ এর পর কয়েক হাজার আফটার শক হয়েছে৷ শুক্রবারও কেঁপে ওঠে তুরস্কের মাটি। দুই ভূমিকম্পের ঘটনার পর ১১ দিন অতিক্রান্ত৷ এখনও চলছে উদ্ধার অভিযান। এখনও পর্যন্ত ৪৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷
ভূমিকম্পের পর ১১ দিন পরেও কিন্তু, জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না স্বেচ্ছাসেবীরা। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এমএসএফ’র দাবি, ধ্বংসস্তূপের নিচে কতক্ষণ জীবিত থাকা সম্ভব, সেটা পুরোপুরি নির্ভর করে শারীরিক কাঠামো, বয়স ও সবলতার ওপর।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>