ম্যাসাচুসেটস: জীবিকার জন্য সাগর–মহাসাগর ঘুরে বেড়ান মানুষগুলিকে কত কিছুই না সহ্য করতে হল৷ কখনও ভীষণ বিপজ্জনক, আবার কখনও রোমাঞ্চকর। প্রাণঘাতী ঘটনার মুখোমুখিও হতে হয় কখনও সখনও। সম্প্রতি এমনই এক প্রাণঘাতী অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল প্যাকার্ড। এক বিশাল তিমির মুখের ভেতর ঢুকেও, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার জীবিকার জন্য মৎস্যজীবী মাইকেল উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটসের উপকূলে গিয়েছিলেন৷ আটলান্টিক মহাসাগরে নীল জলে ডুব দিয়ে বড় আকারের গলদা চিংড়ি ধরায় ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু আচমকাই জলের নিচে সব অন্ধকার হয়ে যায়। হাঙর নয়, এক বিশালাকার তিমি মুখে পুরে নিয়েছিল মাইকেলকে। তবে কী অজ্ঞ্যাঁত কারণে কিছুক্ষণ পরই তিমিটি তাঁকে মুখ থেকে ফেলে দেয়। মাইকেল বলেন, ‘আমি জলের নিচে চিংড়ি ধরছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খাই। এরপর সব অন্ধকার হয়ে যায়। ভেবেছিলাম, হাঙর আক্রমণ করেছে৷ তিমির মুখের ভিতর আমি ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড ছিলাম। হঠাৎ ফের আলো দেখতে পাই। এরপর তিমিটি মাথা বাঁকিয়ে আমাকে ফেলে দেয় এবং আমি নিজেকে জলের মধ্যে দেখতে পাই৷’
তিমির মুখ থেকে ফিরে সামান্য ক্ষত ছাড়া বড় কোনও ক্ষতি হয়নি মাইকেলের। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেয় হাসপাতাল৷ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের জীবন ফিরে পাওয়ার এই গল্প শেয়ার করেছেন৷ মাইকেলকে যে তিমিটি মুখে পুরে নিয়েছিল, সেটি হাম্পব্যাক হোয়েল নামে পরিচিত। এই প্রজাতির পূর্ণবয়স্ক এক একটি তিমি লম্বায় ৩৯ থেকে ৫২ ফুট হতে পারে। ওজন ৩০ টন পর্যন্ত হতে পারে। ম্যাসাচুসেটসের সেন্টার ফর কোস্টাল স্টাডিজের তিমি গবেষক জোকি রবিনস বলেন, ‘আমি মনে করি না মাইকেল কোনও মিথ্যা গল্প শোনাচ্ছেন। জীবিকার জন্য যাঁরা সাগর–মহাসাগরে পাড়ি দেন, তাঁদের ঝুলিতে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা থাকে৷ তবে আমি এমন দুর্ঘটনার কথা আগে শুনিনি। মাইকেল মনে হয়, ভুল সময়ে ভুল জায়গায় চলে গিয়েছিলেন।’