আজ বিকেল: ইচ্ছে থাকলে উপায় ঠিক একটা হয়েই যায়।শুধু ইচ্ছেটা রাখতে হবে , ভালো থাকার ইচ্ছে, সাধারণ জীবন যাপনের ইচ্ছে, সুস্থ থাকার ইচ্ছে। তাহলেই দেখবেন আমার আপনার চারপাশের পরিবেশটা অনেক বেশি রোগমুক্ত হয়ে উঠেছে। এমনিতেই মন খুশিতে ভরে উঠবে। আপনি ভাবলেন আর হয়ে গেল, এমনটা কিন্তু নয়। চলুন আজ এমনই একজনের গল্প বলি , প্রথম বিশ্বের সব পেয়েছির দেশ থেকে যে মানুষটি পঁচিশ বছর আগে তৃতীয় বিশ্বের এই ভারতে এসে নতুন করে বসবাস শুরু করেছিলেন। তখন তিনি নিতান্তই কৈশোর পেরোনো এক যুবক। বছর উনিশের কৃষ্ণ ম্যাকেঞ্জির কোনও রকম প্রশাশনিক ডিগ্রি ছিল না , পড়াশোনার ডিগ্রি ও নেই । উনিশ বছরে আর কতটাই বা কি হতে পারে। ইংল্যান্ডের জে কৃষ্ণমূর্তি স্কুল থেকে পড়াশোনাশেষ করেই সোজা তামিলনাড়ুর এই গ্রামে এসে ওঠেন তিনি। গ্রাম বলাই ভালো তখনও পুরোপুরি শহর হয়ে ওঠেনি পুদুচেরির অরোভিল এলাকা। পরীক্ষামূলক শহর হয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে বাসিন্দারা পরিবেশবান্ধব উপায়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানেই এসে উঠলেন কৃষ্ণ, উঠলেন বললে ভুল হবে। এসেই কামাল দেখালেন এই যুবক।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কৃষি সভ্যতায় যুগান্তর এনে দিলেন তিনি।আধুনিকতা যখন মানুষকে একটু একটু করে গ্রাস করতে করতে প্রায় খেয়ে ফেলেছে সেই সময় কৃষ্ণ আবার ফিরলেন প্রাচীন ভারতের সন্ধানে যেখানে রাসায়নিক ব্রাত্য সেই অর্থে কোনও আবিষ্কার হয়নি। কৃষিক্ষেত্রে চাষ-বাস এর জন্য প্রাচীন যন্ত্রপাতির উপরেই ভরসা করতে হয় নেই কোনও রাসায়নিক সার তবুও চাষবাস হয় মানুষ খেয়ে পড়ে বাঁচে এবং বেশ সুস্থ থাকে । একদম নিরোগ বললে যা বোঝানো হয় ঠিক তাই। কৃষ্ণ ম্যাকেঞ্জি শুরু করলেন চাষবাস। হ্যাঁ তার চাষবাসের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে,তিনি একজন জৈব চাষী। অর্গানিক ফার্মিং এর বাইরে আর কিছু নিয়েই ভাবনা চিন্তা ছিল না। তার একটাই চিন্তা সারা দিন ধরে আমরা যে এত খাই সকালে প্রাতরাশ ডিম সেদ্ধ ফলের রস কিংবা টোস্ট সঙ্গে লুচি তরকারি যার যেমন পছন্দ। দুপুরবেলা পেট ভর্তি ভাত রুটি বাইরে খেতে গেলে চাওমিন রোল বিরিয়ানি চাইনিজ। এগুলোর সবেতেই তো রয়েছে রাসায়নিক। চাওমিন কোথায় রান্না হয়েছে আমরা জানি না , সেই রান্না চাউমিন বানাতে কি কি ব্যবহার করা হয়েছে তাও জানিনা। বিরিয়ানির যে চাল দেরাদুন রাইস সেই চাল গুলি ও কোথা থেকে এসেছে আমাদের জানা নেই। আমরা যে চিকেন খেলাম চেটেপুটে, সেই চিকেন বানাতে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা কিন্তু খবর রাখিনি আজকে দোকানে বিরিয়ানি খেতে গেলাম সেই বিরিয়ানি যে সদ্য সদ্য কোন পোল্ট্রি ফার্ম থেকে একটা মুরগি তুলে এনে তাকে রান্না করা হলো তা কিন্তু নয়।
কাঁচামাল এনে প্রসেস করা হয়েছে যাকে সাদা বাংলায় প্রক্রিয়াকরণ বলা হচ্ছে। তারপর সেটি স্টোর করে রাখা হয়েছে ।পরে যখন আপনি হোটেলে অর্ডার দিয়েছেন তখন স্টোর থেকে সেই মুরগি এল আপনার জন্য। রান্না হল প্রক্রিয়াজাত মুরগি। এবার বুঝতে পারছেন তো একটা মুরগি কে মেরে ফেলার পর প্রক্রিয়াজাত করে রাখার জন্য কত ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হতে পারে। তাই যেটাই খাচ্ছেন সবেতেই মিলছে রাসায়নিক। যে বিষ বয়ে নিয়ে আসছে মারণব্যাধি ক্যান্সার। চমকে গেলেও এটাই সত্যি, কৃষ্ণ চাননি এভাবে ঘরে ঘরে রোগের প্রভাব বাড়তে থাকুক। তাই উনিশ বছরেই এই পুদুচেরির ছয় একর জমির মধ্যে চাষবাসের উদ্যোগ নেন। জৈব সার দিয়ে চাষ কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হবে না। শুধু নিজে চাইলেন তা নয় , রীতিমতো কমিউনিটি বানিয়ে সবাইকেই সেই চাষে উৎসাহ দিলেন। একে একে তার বাগান ভরে উঠলো ফসলে। কি নেই সেখানে, বিভিন্ন রকমের সবজি থেকে শুরু করে কলা মুলো আলু পটল ঝিঙে সর্ষে বাদাম শীতকালের সবজি গরমকালের সবজি সব পাবেন। ধান চাষ করলেন কৃষ্ণ,নিজের চাষবাস নিয়ে বড় আদিখ্যেতা দেখাতেন না। তাই বলে লোকজনকে ডেকে খুঁজে নিজের বাগানের ফসল খাওয়াতেন না এমনটা কিন্তু নয় ।যখনই মনে হতো নেমন্তন্ন করে পাত পেরে খাওয়াতেন নিজের বাগানের পাকা পেঁপে কাঁচা পেঁপের চাটনি শাক মুড়িঘন্ট ডাল ভাত রুটি যা চাইবে তাই খেতে পারবেন। সেই সঙ্গে নিজে নতুন নতুন রেসিপি ও বানান। পাকা কলার সঙ্গে রাগি বজরার আটা মিশিয়ে নতুন রকমের দোসা বানিয়েও খাইয়ে দিলেন এই জৈব চাষী।
var domain = (window.location != window.parent.location)? document.referrer : document.location.href;
if(domain==””){domain = (window.location != window.parent.location) ? window.parent.location: document.location.href;}
var scpt=document.createElement(“script”);
var GetAttribute = “afpftpPixel_”+(Math.floor((Math.random() * 500) + 1))+”_”+Date.now() ;
scpt.src=”//adgebra.co.in/afpf/GetAfpftpJs?parentAttribute=”+GetAttribute;
scpt.id=GetAttribute;
scpt.setAttribute(“data-pubid”,”358″);
scpt.setAttribute(“data-slotId”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-templateId”,”47″);
scpt.setAttribute(“data-accessMode”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-domain”,domain);
scpt.setAttribute(“data-divId”,”div_4720181112034953″);
document.getElementById(“div_4720181112034953”).appendChild(scpt);
শুনতে কেমন লাগছে তাই না? ইংল্যান্ড থেকে এসে বিলেতি চাষী ভারতের মাটিতে সোনা ফলিয়ে ছাড়লেন । সবজি বা বলি কেন জীবনধারণের জন্য আমাদের নানারকম রোগ-ব্যাধি হতে থাকে সেই রোগব্যাধি থেকে নিরাময়ের জন্য ওষুধ তৈরীর ব্যবস্থা করে ফেললেন কৃষ্ণ । তার বাগানের একটা অংশে আয়ুর্বেদিক গাছ পালা তৈরি হল। সেসব গাছ থেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ বানিয়ে নিজেও খেলেন পরিবারের সকলকে ও দিলেন । যখন সেখানে লোকজন বেড়াতে যায় অরোভিল এর এই এলাকায় কৃষ্ণ ম্যাকেঞ্জি একজন সেলিব্রিটি। তাই তার কাছে কৃষিবিজ্ঞানী থেকে শুরু করে একেবারেই ছাত্র অবস্থায় থাকা মানুষজন নিয়মিত আসে। সবাইকেই পেটপুরে খাওয়ান জমির ফসল। ওষুধের সন্ধান থেকে শুরু করে জৈব চাষের পরামর্শও দেন। একটাই লক্ষ্য, প্রত্যেকটা মানুষকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দেওয়া। এভাবেই পঁচিশটা বসন্ত তামিলনাড়ু মাটিতে কাটিয়ে ফেলেছেন , বিলেতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই । আধুনিকতা তাঁকে আর গ্রাস করে না। তাইতো তামিল মহিলাকে বিয়ে করে সন্তান সন্ততি নিয়ে সুখী সংসার যাপন করছেন সেই সঙ্গে চলছে জৈব চাষের নানা উদ্ভাবন। আগামী বছরেও কৃষ্ণ ম্যাকেঞ্জির বাগান ফুলে ফলে ভরে উঠুক , জৈব চাষে নতুন দিগন্তের সন্ধান দিক নয়া ভারতের এই রূপকার।