কাবুল: দীর্ঘ কুড়ি বছর পর আবার আফগানিস্তানের দখল চলে গিয়েছে তালিবানের হাতে। গত ১৫ অগাস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর ইতিমধ্যে একাধিক বিধি-নিষেধ জারি করেছে তারা। মূলত নারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং এর পাশাপাশি শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও ফতোয়া জারি করেছে তালিবান। এবার তারা স্পষ্ট ঘোষণা করে দিল, বিগত কুড়ি বছর অর্থাৎ ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যারা স্নাতক হয়েছে তাদের কোনো মূল্য নেই! এমনকি মূল্য নেই এমএসসি বা পিএইচডি ডিগ্রিরও। মূলত মাদ্রাসা শিক্ষার ওপর জোর দিতে চলেছে তালিবান। তাই বিগত কুড়ি বছরে যে শিক্ষাদান করা হয়েছে তার কোন মূল্য নেই বলেই ঘোষণা করেছে তারা।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিল আব্দুল বাকি হাক্কানি। সেই বৈঠকেই সে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, গত কুড়ি বছর ধরে যারা গ্রাজুয়েট হয়েছে বা অন্য ডিগ্রী পেয়েছে তাদের কোনো মূল্য থাকবে না। তালিবান যে শিক্ষা দেয়নি সেই শিক্ষার কোন মূল্য নেই বলেই ঘোষণা করেছে সে। এই প্রেক্ষিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছে বা ধর্মীয় শিক্ষা নিয়েছে তাদের দাম সবথেকে বেশি হবে কিন্তু যারা বিগত কুড়ি বছর ধরে গ্রাজুয়েট হয়েছে তাদের কোনো দাম দেওয়া হবে না আফগানিস্তানে। অর্থাৎ তালিবানের এই ঘোষণায় স্পষ্ট যে আরো একবার আফগানিস্তানের শিক্ষার ক্ষেত্রে অন্ধকার যুগ ফিরে আসছে। সম্প্রতি পুরুষ এবং নারীদের একসঙ্গে পড়াশোনা করার বিরুদ্ধে নির্দেশ দিয়েছে তালিবান। সবথেকে বড় কথা, মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে খুব একটা বেশি আগ্রহী নয় তারা। যদিও আফগানিস্তান পুনরায় দখল নেওয়ার পর তালিবান স্পষ্ট করেছিল যে আগের মানসিকতা তাদের আর নেই। কিন্তু বাস্তব যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস শুরু করেছে তারা স্বাভাবিক নিয়মেই। তালিবানি নিয়ম না মানলে হত্যা পর্যন্ত করা হচ্ছে। কাজের ক্ষেত্র থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তালিব সরকারের পক্ষ থেকে। এদিকে আবার আন্তর্জাতিক ভাবে কার্যত বঞ্চিত হয়ে গিয়েছে আফগানিস্তান। অর্থ সাহায্য পাচ্ছে না তাই সেখানে খাবার থেকে শুরু করে বিদ্যুতের ঘাটতি শুরু হয়েছে। যদিও এই সব ব্যাপারে খুব একটা বেশি পাত্তা দিচ্ছে না তালিবান।