বেজিং: ভারত এবং চিন সংবাদমাধ্যমের তফাৎ তো আছেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী খবর প্রকাশের ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত কিছু বলেননি। সরকারও ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি। চিন সরকার বা সেনা তো আজ পর্যন্ত বলে ওঠতে পারল না সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। কিন্তু, ভারতীয় মিডিয়া ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে ১০০ শতাংশ চেষ্টা করেছে। দুর্ভাগা চিন সংবাদমাধ্যম। সব কিছু জেনেও খবর প্রকাশ করতে পারছে না। আবার হজামও করতে পারছে না।
চিনা ট্যাবলয়েড খবরের কাগজ 'গ্লোবাল টাইমস' চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র 'পিপলস ডেইলি'র নিয়ন্ত্রণাধীন। এক বিশেষজ্ঞের থেকে জানলাম, ১৫-১৬ জুন রাতে গলওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনার সংঘর্ষের খবর গ্লোবাল টাইমসের ১৬ পাতায় জায়গা পেয়েছে। পিপলস ডেইলি এবং পিএলএ ডেইলিতে (চিন সেনার মুখপত্র) এই খবর খুঁজেই পাননি ওই বিশেষজ্ঞ। যদিও এটা খুবই স্বাভাবিক। ৫০-৫৫ ভারতীয় সেনা ২৫০ চিন সেনার অতর্কিত, পূর্ব-পরিকল্পিত হামলা সামলে দিয়েছে। প্রায় ৫০ এর বেশি চিন সেনা নিহত বা আহত।
স্ট্রেচার, এম্বুলেন্সের সংখ্যা হিসাব করেছে ভারতীয় সেনা চৌকি। সেনা সূত্রে সে খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছেও এসেছে। একটি আমেরিকান ওয়েবসাইটে তাদের ইন্টেলিজেন্স রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ৩৫ জন চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে। এই খবর, স্বাভাবিকভাবেই সারা বিশ্বে বৃহৎ চীন সেনার মান-সম্মানে ভাগ বসাত। চিনের বিদেশমন্ত্রক বা সেনা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করবে না, তা বুঝতে সময় লাগা উচিত নয়।
কোনও পেশাদার সেনা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা লুকিয়ে রাখতে 'চায়না' ! ভারতীয় সেনাও তা গোপন করেনি। কিন্তু, তথ্য গোপনে মাস্টারমশাই চিন বা চিনা সেনা এই কাজ, তা এই ঘোর করোনা (Covid 19) আবহে অনুমান করা কঠিন নয়। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি'র (এম আই টি)-এর চিন এবং চিনা-প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এম. টেইলর ফ্রাভেলের একটি মন্তব্যে আমার চোখ পড়েছে। এম আই টি সিকিউরিটি স্টাডি প্রোগ্রামের (এম আই টি – এস এস পি) অধিকর্তা এই শিক্ষাবিদের বক্তব্য, যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংগ্রামে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ করতে চিন বছরের পর বছর বা কয়েক দশক সময় নেন। নিজেদের অভ্যন্তরীন ইতিহাসে ১৯৬২-এর যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ্যে এনেছে চিন। ১৯৯৪ সালে।