গভীর জলে শিকারী মাছের রহস্য ভেদ, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা

গভীর জলে শিকারী মাছের রহস্য ভেদ, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা

ওয়াশিংটন: গভীর থেকে গভীরতম সমুদ্রের নিচে যেখানে সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না, সেখানে লুকিয়ে থাকে কিছু চোরা শিকারির দল। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন, সমুদ্রের গভীরে এমন কিছু প্রজাতির মাছ আছে, যারা এতটাই কালো যে, লুকিয়ে থাকতে পারে জলের গভীর অন্ধকারে৷ এই প্রজাতির মাছগুলি প্রায় ৯৯.৫ শতাংশ আল শোষণ করতে পারে৷ তাদের অনন্য ত্বকের সাহায্যে। এই প্রজাতি মাছের আলট্রা-ব্ল্যাক ফিশ বলা হয়ে থাকে৷

এই ধরনের মাছগুলির দেহের রংকে একপ্রকার বায়োলুমিনেসেন্স থাকে যা এই আলো শোষণ করার ক্ষমতা প্রদান করে৷ বিজ্ঞানীরা এই ধরনের ১৬টি প্রাজাতি মাছকে নিয়ে গবেষণা করে, এই অদ্ভুত ক্ষমতার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন৷ এই ধরনের মাছগুলি যেমন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় ব্ল্যাকড্রাগন, ফ্যাংটোথ, অ্যাঙ্গারফিশ, ব্ল্যাক শোয়ালার ইত্যাদি৷ তাদের ত্বককে এমনভাবেই বিবর্তন করেছে, যে সেখান থেকে মাত্র ০.৫ শতাংশ আলো প্রতিফলিত হয়, ফলে তারা সমুদ্রের তলদেশের ২০০মিটার গভীরে, যেখানে সূর্যালোকের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে, সেখানে অনায়াসে লুকিয়ে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই আলট্রা ব্ল্যাক প্রজাতির অস্তিত্ব ৬টি পৃথক অর্ডারে বিস্তৃত। এর মধ্যে একটি বৃহত্তর গোষ্ঠীর মাছের বিবর্তনমূলক ইতিহাসের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায়, এই প্রজাতির মাছগুলির প্রত্যেকটির এমন অদ্ভুত শক্তি স্বাধীনভাবে বিবর্তিত হয়েছে সময় অনুযায়ী।

“গভীর থেকে গভীরতর উন্মুক্ত সমুদ্রের তলদেশে, যেখানে লুকোবার কোনো জায়গা নেই৷ সেখানে লুকিয়ে থাকে এই ধরনের শিকারির দল।’’ বললেন ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারল হিস্ট্রির প্রাণীতত্ববিদ কারেন অসবর্ন। তিনি আরও বললেন, ‘‘একটি প্রাণী মুলত তার পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য বজায় করে বেঁচে থাকে, পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে তার শরীরে নানা প্রকার বিবর্তন আসে, এই ধরনের কিছু প্রজাতি জলের তলায় প্রায় ৫ হাজার মিটার গভীরেও বসবাস করে থাকে।’’ এই ধরনের মাছের ত্বকের আবরন এতটাই কালো হয় যে আলোর মধ্যে এলেও এদের শরীরের আকার সিলিউটের মত দেখায়- এটি অসবর্ন এই প্রজাতির মাছকে পরীক্ষা করার সময় ছবি তোলার জন্যে যখন আলোর কাছে নিয়ে আসেন তখন আবিষ্কার করেন। তিনি আবিষ্কার করেন, সমস্ত আলো মাছটির ত্বকের এই বিশেষ মেলানিন এ এসে আঘাত করে, কিন্তু কালো হবার জন্য আর ফিরে যেতে পারেনা। কারেন অসবর্ন জানান, ভবিষ্যতে এই কালো মেলালিন হাইটেক অপটিক্স বা ছদ্মবেশের উপাদান নাইট অপ্স ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + eleven =