কিয়েভ: দেখতে দেখতে দুই মাসেরও বেশি সময় পার করেছে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার সংঘাত। রুশ বাহিনীর প্রতিঘাতে কার্যত মৃত্যুপুরীর রূপ নিয়েছে ইউক্রেন। কিন্তু তারপরেও যুদ্ধ থামার নামই নিচ্ছে না রাশিয়ার আগ্রাসন। জানা যাচ্ছে, যুদ্ধের ৬৩তম দিন বৃহস্পতিবারই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পরপর দুটি মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এদিকে এদিনই ইউক্রেনে পা রেখেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদামির জেলেনস্কির সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেন। সূত্রের খবর এই বৈঠক যখন চলছিল ঠিক তখনই কিয়েভ সিটি সেন্টার থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়ে ওই দুটি রুশ মিসাইল। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই হামলায় অন্তত ১০ জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই কিয়েভের মেয়র এই ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই কিয়েভের মেয়র এই হামলার কথা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন যে অঞ্চলে ওই রুশ মিসাইল দুটি পড়েছে সেখানে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই এই হামলায় আহত এবং নিহতের সংখ্যা প্রসঙ্গে বিস্তারিত বিবৃতি দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে যে গোটা ঘটনা শুনে কার্যত স্তম্বিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবও।
বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনে পৌঁছেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবসহ একটি বিশেষ পরিদর্শনকারী দল। সেই দলে রয়েছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মুখপাত্র স্যাভিয়ানো আব্রু। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এই হামলায় তাদের মধ্যে কেউই হতাহত হননি। তবে তিনি হামলা প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, ‘আমরা জানি এটা যুদ্ধক্ষেত্র, তাই যেকোন সময় যেকোনও এলাকাতেই হামলা হতে পারে। কিন্তু যে এলাকায় আমরা রয়েছি সেখানেই হামলা হয়েছে। আর তাতেই আমরা সব থেকে বেশি আশ্চর্য হয়েছি।’
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব এবং তাঁর দলের সঙ্গে আমাদের একটি বিশেষ বৈঠক ছিল। কিয়েভেই এই বিশেষ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৈঠক শেষ হতে না হতেই এই হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, ‘রুশ নেতৃত্ব রাষ্ট্রসংঘ এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত সব সংগঠনের সম্মানহানি করতে চাইছেন এবং অবিলম্বে এই ঘটনার যোগ্য জবাব দেওয়া উচিত।’
জানা যাচ্ছে বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি সঙ্গে বৈঠকের আগেই গত মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব। বৈঠকে তিনি পুতিনকে আজভস্টল স্টিল প্লান্ট থেকে নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেন। কিন্তু তারপরেই যে অঞ্চলে উপস্থিত রয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব নিজে, সেখানেই রুশ বাহিনীর এই মিসাইল হামলা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা এবংবিতর্ক। তবে এই ঘটনা প্রসঙ্গে মস্কোর তরফ থেকে এখনও মুখ খোলা হয়নি বলেই খবর।