মক্সো: আন্তর্জাতিক মিসাইল চুক্তি থেকে শনিবার নিজেদের সরিয়ে নিল রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ খবর জানিয়েছেন। শুক্রবারই এই চুক্তি থেকে অংশগ্রহণ প্রত্যাহার করে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক মিসাইল চুক্তিটি ১৯৮৫ সালে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সম্পাদিত হয়েছিল। পুতিন জানিয়েছেন, রাশিয়া নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে আর মার্কিন যুক্তরাষ্টের সঙ্গে কথাবার্তা চালাবে না। তিনি আরও বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগী দেশগুলি যতদিন না ফলপ্রসূ আলোচনা করছে ততদিন পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করবেন।
গত বছরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, রাশিয়াকেও নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আন্তর্জাতিক মিসাইল চুক্তিতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে (নিরস্ত্রীকরণ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে রাশিয়াকে গতবছরের ডিসেম্বরে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও সের্গেই শোইগুর সঙ্গে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বৈঠকের পর পুতিন জানান যে, নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে রাশিয়া আর আমেরিকার সঙ্গে কোনও আলোচনা করবে না।
আন্তর্জাতিক মিসাইল চুক্তিঃ
এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মিসাইল চুক্তিটি সম্পাদিত হয়েছিল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগন ও শেষ সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচভের মধ্যে। চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহের কাজে ইতি টানা হয়েছিল। যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহের কাজ ইউরোপীয় দেশগুলিকে যথেষ্টই ভীত করে তুলেছিল।
চুক্তির ফলে নিষিদ্ধ হয়েছিল ভূমি থেকে নিক্ষিপ্ত এমন ক্ষেপণাস্ত্র যেগুলি ৫০০ থেকে ৫৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম।পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে থাকা পরমাণু-অস্ত্র বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্রগুলি নিয়ে যে গুরুতর আশঙ্কা করা হয়েছিল তা দূরীভূত হয়েছিল এই চুক্তির ফলে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পশ্চিমী দেশগুলির রাজধানী লক্ষ্য করে নির্মিত হয়েছিল।
চুক্তির ফলে রাশিয়ার প্রতি লাগাম টানা সম্ভব হলেও চিন-সহ অন্যান্য সামরিক শক্তিধর দেশগুলিকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজ থেকে বিরত রাখার ক্ষেত্রে সফল হওয়া যায়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবারই স্পষ্ট করে দেন যে, তাঁর দেশ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে যা আগামী ছ’মাসের মধ্যে সম্পূ্র্ণ করা হবে। ট্রাম্প বলেন যে তিনি সকলকে নিয়ে একটি নতুন চুক্তি করবেন যেখানে আমেরিকার স্বার্থকে কোনওভাবেই ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া যাবে না।