পরীক্ষিত নয় করোনার প্রতিষেধক! স্বাস্থ্য মন্ত্রক ছাড়লেন রাশিয়ার চিকিৎসক

রাশিয়া সম্ভবত বিশ্বের প্রথম দেশ যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরির নাম নথিভুক্ত করেছে। তবে বিশ্বের তাবড় বিশেষজ্ঞরা এবং স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি রাশিয়ান এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত নন। ‘স্পুটনিক ভি’ হিসাবে নামাঙ্কিত, রাশিয়ার এই ভ্যাকসিনটি মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউট এবং রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তৈরি করেছে। তবে, আবিষ্কারের পরও এই ভ্যাকসিনের চারপাশের বিতর্কগুলি থামাতে পারেনি। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে রাশিয়ান ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি। বিশ্বের অন্যান্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রাশিয়ান ভ্যাকসিনটি নিয়ে যেমন আস্থায় দেখায়নি, তেমনই রাশিয়ার প্রথম সারির এক চিকিৎসক এই ভ্যাকসিনের সমালোচনা করেছেন।

 

মস্কো: রাশিয়া সম্ভবত বিশ্বের প্রথম দেশ যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরির নাম নথিভুক্ত করেছে। তবে বিশ্বের তাবড় বিশেষজ্ঞরা এবং স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি রাশিয়ান এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত নন। ‘স্পুটনিক ভি’ হিসাবে নামাঙ্কিত, রাশিয়ার এই ভ্যাকসিনটি মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউট এবং রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তৈরি করেছে।

তবে, আবিষ্কারের পরও এই ভ্যাকসিনের চারপাশের বিতর্কগুলি থামাতে পারেনি। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে রাশিয়ান ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি। বিশ্বের অন্যান্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রাশিয়ান ভ্যাকসিনটি নিয়ে যেমন আস্থায় দেখায়নি, তেমনই রাশিয়ার প্রথম সারির এক চিকিৎসক এই ভ্যাকসিনের সমালোচনা করেছেন।

আরও পড়ুন: আছে জল, মিলতে পারে প্রাণের সন্ধান! গবেষকদের নজরে ‘বিকল্প পৃথিবী’!

মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার শ্বাসযন্ত্র সম্পর্কিত চিকিৎসক অধ্যাপক আলেকজান্ডার চুচালিন রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক ত্যাগ করেছেন। তাঁর বক্তব্য ‘স্পুটনিক ভি’ চিকিৎসার নৈতিকতার ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ করেছে। জানা গিয়েছে যে অধ্যাপক আলেকজান্ডার ‘বিশ্বের প্রথম করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন’ নিবন্ধীকরণ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ‘সুরক্ষার’ ভিত্তিতেই এমন কথা মন্ত্রকের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েওছিলেন তিনি। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হন তিনি।

ফলে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নীতি পরিষদ ত্যাগ করেছেন অধ্যাপক আলেকজান্ডার। দেশের সেরা দুই পালমোনোলজিস্টের নাম নিয়েও সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ, যিনি গামালিয়া গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক এবং অন্যজন অধ্যাপক সের্গেই বোরিসিভিচ। তিনি রাশিয়ার ভাইরোলজির শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ। এই দুই বিজ্ঞানীই ‘স্পুটনিক ভি’ এর বিকাশের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অধ্যাপক আলেকজান্ডার চুচালিনের মতে, এই ভ্যাকসিনকে উৎপাদনে সাহায্য করে তাঁরা ‘মেডিকেল এথিক্স নষ্ট করেছেন’।

একটি প্রতিবেদন অনুসারে, অধ্যাপক চুচালিনকে এই দুই শীর্ষস্থানীয় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারীদের সুরক্ষা মান নয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিন। তিনি তখন বলেন, “আপনি কি রাশিয়ান ফেডারেশন আইন এবং আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় দ্বারা অনুমোদিত সমস্ত প্রয়োজনীয় পথ পেরিয়ে গেছেন? না! এই কাজ এখনও শেষ হয়নি। সুতরাং, ওষুধের নৈতিক নীতিগুলির মধ্যে একটি গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।” তিনি রাশিয়ান ভ্যাকসিনের সুরক্ষা সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেন। বলেন, “'আমাদের দেশের বেশ কিছু বিজ্ঞানীর অবস্থান দেখে আমি হতাশ হয়েছি। তাঁরা রেডিমেড ভ্যাকসিন সম্পর্কে দায়িত্বহীনের মতো বক্তব্য দিচ্ছে।”

এটি লক্ষণীয় যে রাশিয়া তৃতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রায়া শেষ না করে ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে। যেখানে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ভ্যাকসিন প্রার্থীকে প্রতিষেধক দেওয়ার পর এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াও লক্ষ করা হয়। পাশাপাশি কাকে কত ডোজ দিতে হবে তাও নির্ধারণ করা হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনের কন্যাকে ইতিমধ্যে ‘স্পুটনিক ভি’ এর ডোজ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুটারেও গণমাধ্যমকে সম্বোধন করে বলেন, 'স্পুটনিক ভি' দেশে এলে তিনি নিজে সবার সামনে সেই ভ্যাকসিন নেবেন। প্রথমে তাঁর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা হবে। তারপর সেটি দেশবাসীকে দেওয়া হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − one =