হো চি মিন সিটি: করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের একাধিক দেশে চলছে লকডাউন৷ সংকটে হাজারো মানুষ৷ কর্মহীন বহু মানুষ৷ বেশ কিছু দেশে শুরু হয়ছে খাদ্য সংকট৷ করোনার কালো ছায়া গ্রাস করেছে ছোট্ট দেশ ভিয়েতনামকেও৷ এই অবস্থায় অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন ভিয়েতনামের এক উদ্যোগপতি হোয়াং তুয়ান অ্যান৷ মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে তিনি শুরু করলেন চালের এটিএম৷
দেশের কোনও মানুষ যেন অভুক্ত না থাকেন, তা নিশ্চিত করতেই তিনি চালু করেন চালের এটিএম৷ যেখান থেকে সহজেই চাল সংগ্রহ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ৷ প্রত্যেককে দিনে দেড় কেজি করে চাল দেওয়া হবে৷ দিনে বা রাতে যে কোনও সময় এই এটিএম থেকে চাল সংগ্রহ করা যাবে৷ শুধু হো চি মিন নয়, রাইস এটিএম চালু করা হয়েছে হ্যানয়, হিউ এবং ডানাং-এর মতো বড় বড় শহরগুলিতেও৷
রাইস এটিএম নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, কোনও মন্তব্য করতে চাননি এটিএমের পর্যবেক্ষক এবং কর্মীরা৷ তবে অ্যান জানান, অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু কোনও মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে, সেই চেষ্টাই আমরা চালিয়ে যাচ্ছি৷
অ্যান একটি বৈদ্যুতিন জিনিস তৈরির সংস্থার মালিক। হো চি মিন শহরের তান ফু জেলায় রয়েছে তাঁর দফতর৷ তিনি বলেন, “করোনা সংক্রমণ দেশের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন করা হয়৷ পাশাপাশি সেই সকল জায়গায় খাবার বিলি করাও শুরু হয়। কিন্তু এই ত্রাণ সংগ্রহে সব জায়গায় ভিড় জমতে দেখে এটিএম-এর বিষয়টি আমার মাথায় আসে৷ মনে হয়, এমন কোনও ব্যবস্থা যদি করা যায়, যেখানে নির্দিষ্ট সময়ে একসঙ্গে বহু মানুষ ভিড় না করেই একজন একজন করে প্রয়োজন মতো চাল সংগ্রহ করতে পারবেন।”
তিন সন্তানের মা ৩৪ বছরের এক মহিলা বলেন, ‘‘এই এক ব্যাগ চাল একদিন সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট৷ তবে অন্যান্য খাবারের অভাব রয়েছে৷ সেই অভাব মিটিয়ে দেন প্রতিবেশিরা৷ বাড়তি খাবার তাঁরা তুলে দেন আমাদের হাতে৷’’ করোনা বিরোধী যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সফলতা পয়েছে ভিয়েতনাম। ১০ কোটির এই দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য। আক্রান্তের সংখ্যা ২৬২৷
সংক্রমণ রুখতে ৩১ মার্চ থেকে ভিয়েতনামে শুরু হয় সোশ্যাল ডিস্টেনসিং প্রোগ্রাম৷ ভিয়েতনামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ২৩ জানুয়ারি। চিনের পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে তারা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে, তা প্রশংসনীয়।