করাচি: ভারতের শক্তির সঙ্গে পেরে উঠবে না পাকিস্তান৷ সে কথা খুব ভালোই জানতেন ইমরান৷ মঙ্গলবার নিজেদের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে পুলওয়ামা কাণ্ডে পূর্ণ তদন্তের বার্তা পাঠালেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি৷ যুদ্ধ হলে দুই দেশের ক্ষতি হবে বলেও জানান ইমরান৷
সাংবাদিক বৈঠক করে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলওয়ামার কাণ্ডের পর আমরা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতে চেয়েছিলাম৷ যুদ্ধ না করে আমাদের আলোচনা করা প্রয়োজন৷ যুদ্ধ হলে দুই দেশের ক্ষতি৷ পাকিস্তান আক্রমণ করতে চাই না৷ আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে৷ আমরা ভারতকে ক্ষতি করতে চাই না৷ আক্রমণ হলে পাকিস্তানও জবাব দিতে জানে৷ আমরা চাই না, দেশের মানুষের ক্ষতি হোক৷ আলোচনা হলেই সমস্যা সমাধান সম্ভব৷’’
Pakistan Prime Minister Imran Khan: If a war takes place, it will not be in my or Narendra Modi’s control. If you want any kind of talks on terrorism, we are ready. Better sense must prevail. We should sit down & talk pic.twitter.com/XydmNgLYYC
— ANI (@ANI) February 27, 2019
বুধবার সকালে ভারতের আশাকসীমা পেরিয়ে হামলা, বিকালে আলোচনার প্রভাব ঘিরে নয়া পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ কেননা, সতীর্থদের উপর ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের খবর পেয়ে ভারতকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী৷ ভারতে জবাব দেওয়া হবে, এই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়িয়ে এবার আত্মসমর্পণের বার্তা পাকিস্তানের৷ যুদ্ধ করে লাভ হয় না, আলোচনার মাধ্যমে হোক সমস্যার সমাধান৷ বুধবার পাক সেনা মুখপত্রের পর একই বার্তা পাঠান ইমরান৷
কিন্তু, হঠাৎ কেন এই বার্তা? মনে করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহল থেকে চিন-আরব ছাড়া আর কোনও দেশের সমর্থন পায়নি পাকিস্তান৷ তার উপর আমেরিকাও আর্থিক সাহায্য করা বন্ধ করে দিয়েছে৷ চূড়ান্ত অর্থ কষ্টে রয়েছে পাকিস্তান৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন৷ মনে করা হচ্ছে, সব দিক খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের৷
কখন, কোথায়, কীভাবে প্রত্যাঘাত করা হবে তা ঠিক করবে পাকিস্তান। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পর একথা জানান পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে যা সংসদকে সবকিছু জানাবে।
তারা ভারতের সব দাবিকে অসত্য বলে বর্ণনা করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে নির্বাচনী আবহাওয়ায় আঞ্চলিক শান্তি ও স্থায়িত্বকে বন্ধক রেখে এই কাজ করা হয়েছে। যেখানে বিমানহানা হয়েছে, সেখালে প্রকৃত পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে যাবে পাক সরকার। একইসঙ্গে সবরকমের অবস্থার জন্য জনগণকে তৈরি থাকতেও বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সংসদে তুলোধোনা করা হয়েছে ইমরানকে। মঙ্গলবার বিরোধীরা সংসদে ইমরানের উদ্দেশে শেম, শেম বলে আওয়াজ তোলে। এই ধিক্কারের মুখে পড়ে পাক মন্ত্রীরা তাদের থামানোর চেষ্টা করলেও তাতে কাজ হয়নি। দ্বিগুণ জোরে ইমরানের সরকারের বিরুদ্ধে শেম, শেম ধ্বনি ওঠে। ভারত আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে এবং পাক বিমানবাহিনী পাল্টা দেওয়ার আগেই তারা পালিয়ে বলে সরকার যে বিবৃতি দিয়েছে, তা মানতে নারাজ পাকিস্তানের বিরোধী দলের নেতারা।