ওদের বাসযোগ্য নয় পৃথিবী! ২১-এর আগেই মুছে যাবে শ্বেত ভালুকের প্রজাতি

ওদের বাসযোগ্য নয় পৃথিবী! ২১-এর আগেই মুছে যাবে শ্বেত ভালুকের প্রজাতি

 

নিউ ইয়র্ক: এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি— নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার৷ না, সুকান্ত ভট্টাচার্যের সেই দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তাবে মিলছে না৷ মানব সভ্যতার উন্নয়নের বলি হতে হতে চলেছে সুমেরুকে আগলে রাখা  শ্বেতভুভ্র প্রাণিটি৷ বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে সুমেরু অঞ্চলের জলবায়ুতে যে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পোলার বিয়ার বা শ্বেত ভালুক৷ সমীক্ষা বলছে, আবহাওয়ার এই পরিবর্তন রোখা না গেলে এই শতাব্দীর শেষেই হয়তো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সুমেরু অঞ্চলের এই শ্বেতভুভ্র প্রাণিটি৷   

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মেরু অঞ্চলে বরফ গলতে শুরু করায় ইতিমধ্যেই শ্বেত ভালুকের সংখ্যা অনেকটা কমতে শুরু করেছে৷ সাধারণত সুমেরু মহাসাগরের সিল মাছ খেয়েই জীবনধারণ করে শ্বেত ভালুকরা৷ আর সিল মাছ শিকারের জন্য সমুদ্রের বরফের উপর নির্ভর করেত হয় তাদের৷ সমুদ্রের বরফ গলে যাওয়ায় খাদ্য সংগ্রহের লড়াইটা কঠিন হয়ে উঠছে শ্বেত ভালুকদের জন্য৷ নিজেদের এবং তাদের শাবকদের জন্য খাদ্যের সন্ধানে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হচ্ছে৷ কিংবা যেতে হচ্ছে তীরবর্তী এলাকায়৷

কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. পিটার মোলনার আবার বলেন, এই ভালুক এখন ‘জলবায়ু পরিবর্তনের পোস্টার চাইল্ড’ হয়ে গিয়েছে৷ শ্বেত ভালুকরা এমনিতেই পৃথিবীর শীর্ষে বসে রয়েছে৷ যদি এখানকার বরফ গলতে শুরু করে, তাহলে তাদের যাওয়ার আর কোনও জায়গা থাকবে না৷ ২১০০ সাল  নাগাদ পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে মেরু অঞ্চলের শ্বেত ভালুক। 

ইতিমধ্যেই শ্বেত ভালুককে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণির তালিকাভুক্ত করেছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)৷ এদের অবলুপ্তির একমাত্র কারণ হল আবহাওয়ার পরিবর্তন৷ বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরেই হয়তো এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে সুমেরু অঞ্চলের এই শ্বেত ভালুক৷ বরফ গলার সঙ্গে সঙ্গে বিপন্ন হবে তাদের অস্তিত্ব৷ সম্প্রতি এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যাচারাল ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এ৷ এই গবেষণায় শ্বেত ভালুকের অবলুপ্তির আনুমানিক সময়ও উল্লেখ করা হয়েছে৷ 

এই সমীক্ষার অন্যতম সদস্য পোলার বিয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রধান বিজ্ঞানী ড. স্টিভেন আমস্টরুপ বলেন, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে শ্বেত ভালুকের শাবকগুলিকে বাঁচানোই সবচেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷ কারণ শাবকের জন্ম হলেও, বরফ-মুক্ত মরশুমে স্ত্রী ভালুকের শরীরে দুধ উৎপাদনের মতো ফ্যাট আর থাকবে না৷ বরফ গলে যাওয়াও ৮০ শতাংশ শ্বেত ভালুকই খাদ্য এবং প্রজনন সমস্যার পড়বে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 3 =