ঢাকা: করোনাভাইরাস পরিস্থিতির রক্তচক্ষু কাটিয়ে উঠে প্রথম বিদেশ সফর করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দিনের সফরে বাংলাদেশে গিয়েছেন তিনি সেই দেশের ৫০ তম স্বাধীনতা উদযাপনের সাক্ষী থাকতে। কিন্তু মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ধর্মনিরপেক্ষতার সাক্ষী আলাদা ভাবে থাকতে হলে তাঁকে। ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ যেন ভারতবর্ষকে নতুন করে ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ পড়ালো, যার সাক্ষী থাকলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেন্দ্রীয় সরকার বারংবার বলে এসেছে বাংলাদেশের হিন্দুরা অত্যাচারিত। শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানেও হিন্দুদের করুণ অবস্থার কথা একাধিকবার ব্যাখ্যা করেছে তারা। সেই প্রেক্ষিতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এসে এই সমস্ত দেশ গুলির সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছে বিজেপি। কিন্তু সেই মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার নতুন উদাহরণ স্বচক্ষে দেখতে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। শুধু হিন্দু ধর্ম নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠান শুরু হল হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ধর্মের কিছু কথার মাধ্যমে। অর্থাৎ খুব সৌখিন ভাবে হয়তো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হলেন যে ধর্মনিরপেক্ষতা কাকে বলে। অবশ্যই তার সচক্ষে দেখলেন এবং উপলব্ধ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানের শুরুতে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কিছু কথা বলতে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে। ঠিক তার পরেই বৌদ্ধ ধর্মের একজন সদস্য এবং খ্রিস্টান ধর্মের একজন সদস্য নিজেদের বক্তব্য রাখেন। মনে রাখতে হবে, হিন্দু ছাড়াও এই ধর্মের লোকেরা কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘু। কিন্তু তাও এই অনুষ্ঠান যেন সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিল তাদেরই।
আরও পড়ুন- প্রতিবাদই সার, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ হবেই! সাফ জানালেন RBI কর্তা
উল্লেখ্য, আজ বাংলাদেশের ৫০ তম স্বাধীনতা দিবস, এর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। যা একত্রিত ভাবে পালন করছে বাংলাদেশ। এই উপলক্ষে বাংলাদেশকে ভারত ১২ লক্ষ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। অন্যদিকে সফর চলাকালীন বাংলায় টুইট করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে লেখেন, “বিমানবন্দরে বিশেষ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। এই সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।” তবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক করার ক্ষেত্রে এই ধর্মনিরপেক্ষতা ইস্যুও যে অনেক বড় ফ্যাক্টর তা হয়তো আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।