পেট চালাতে রাস্তায় বসে খাবার বিক্রি করছেন এই সাংবাদিক!

পেট চালাতে রাস্তায় বসে খাবার বিক্রি করছেন এই সাংবাদিক!

আফগানিস্তান: তালিবান শাসনে আফগানিস্তানের যে কী ভয়াবহ হাল, সাম্প্রতিককালে প্রকাশ্যে এল তার আরও একটি ভয়াবহ ছবি। উল্লেখ্য ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট  তালিবানরা পুনরায় আফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা। তালিবানি জামানায় কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। বাকস্বাধীনতা থেকে শুরু করে নূন্যতম শিক্ষার স্বাধীনতা থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন সে দেশের নারীরা। এমতাবস্তায় দেশের জনসাধারণের জীবনযাপন নিয়ে যখন চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহল, তখনই সামনে এল আফগান এক সাংবাদিকের করুণ পরিণতির ছবি। সম্প্রতি টুইটারে মুসা মুহাম্মদী নামের এক সাংবাদিকের ছবি ভাইরাল হয়েছে। যিনি একসময় আফগানিস্থানের অন্যতম জনপ্রিয় সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তালিবান জামানায় বাকিদের মতো কাজ হারিয়েছেন এই জাদরেল সাংবাদিকও। আর তাই নিজের এবং সংসারের বাকি সদস্যদের পেট চালাতে শেষমেষ তাকে পথের ধারে বসে বিক্রি করতে হচ্ছে খাবার। তাঁর সাম্প্রতিককালের এই ছবি দেখে রীতিমতো চমকে উঠেছে গোটা বিশ্ব। বছরের পর বছর ধরে আফগানিস্তানের জনপ্রিয় বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে আঙ্কার এবং রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার পরেও বর্তমানে তাঁর এই করুণ পরিণতি তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে তালিবান জামানায় আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

উল্লেখ্য দিন কয়েক আগেই তালিবান সরকারের তরফ থেকে আরও একটি নতুন ফরমান জারি করে জানানো হয়েছিল এরপর থেকে আফগানিস্তানের সমস্ত মহিলা সাংবাদিক তথা আঙ্কার এবং রিপোর্টারকে টিভির সামনে আসতে হলে মুখ এবং শরীরের সমস্ত অংশ ঢেকে আসতে হবে। কোনভাবেই প্রকাশ্যে দেখানো যাবে না ওই সাংবাদিকের নাম এবং পরিচয়। এমনকি আফগানিস্তানের পুরুষ সাংবাদিক এবং রিপোর্টাররাও তালিবানি ফতোয়ার হাত থেকে রেহাই পাননি। তাদের ক্ষেত্রেও জারি করা হয় বেশ কিছু কড়াকড়ি নিয়ম, যার জন্য অনেক টিভি আঙ্কারকেই মুখে মাস্ক পরে ক্যামেরার সামনে আসতে দেখা দিয়েছে সাম্প্রতিককালে। ইতিমধ্যেই বিষয়গুলি নিয়ে চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহল। এইভাবে একের পর এক কঠোর তালিবানি ফতোয়ায় দেস যে কয়েক বিংশ শতাব্দী পিছিয়ে যাচ্ছে তা আঁচ পড়তে পেরে ইতিমধ্যেই আফগানিস্তান নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে।

অন্যদিকে এই আফগানিস্তানের সাংবাদিকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় তার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে বেশ কিছু বেসরকারি টেলিভিশন সংস্থা। ইতিমধ্যেই একটি নিউজ চ্যানেলের মুখপাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন যে, খুব শীঘ্রই ওই সাংবাদিক যাতে পুনরায় কাজে যোগ দিতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হবে। কারণ একদিকে যেমন মুসা মুহাম্মদীর মতন সাংবাদিকের কাজের প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি অন্যদিকে এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে দায়িত্ববান সাংবাদিকেরও প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *