জ্বলছে পেরু, কী চাইছে আন্দোলনকারীরা? কী ভাবে থামবে অশান্তি?

জ্বলছে পেরু, কী চাইছে আন্দোলনকারীরা? কী ভাবে থামবে অশান্তি?

 লিমা: অশান্ত পেরু৷ সরকার বিরোধী আন্দোলনে গত তিন মাস ধরে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন৷ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লাগাতার সংঘর্ষে বাড়ছে মৃত্যু মিছিল৷ মাস দেড়েক ধরে চলা বিক্ষোভ-আন্দোলনের আগুনে পুড়ছে গোটা দেশ৷ 

আরও পড়ুন- তুরস্ক যেন ধ্বংসস্তূপ! কেন এত ভয়াবহ ভূমিকম্প হল এখানে?

কিন্তু কী নিয়ে আশান্তি? 
বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি, জেল বন্দি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়ো-তে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে। সেই সঙ্গে দেশে সাধারণ নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার করেত হবে৷ গত ডিসেম্বর মাসে অনৈতিক ভাবে কংগ্রেস মুলতুবি করার অভিযোগ আনা হয় পেদ্রোর বিরুদ্ধে। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পেদ্রোর জায়গায় এখন প্রেসিডেন্টের গদিতে বসেছেন দিনা বোলুয়ার্তে। ক্ষমতায় এসেই দিনা সাফ জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের সব দাবি মানা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর বক্তব্য, দ্রুত নির্বাচন করার বিষয়ে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে নিজের বক্তব্যে পরোক্ষ ভাবে এও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে এখনই ছাড়া হবে না। 

দিনা বোলুয়ার্তে ২০২৪ সালের এপ্রিলের পরিবর্তে নির্বাচনের দিন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এগিয়ে আনার জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বিক্ষোভকারীরা দিনার কথায় শান্ত হতে নারাজ৷ তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর কংগ্রেস ভেঙে ডিক্রির মাধ্যমে শাসন করার চেষ্টার অভিযোগে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়োকে গ্রেফতারের পর থেকে প্রায় প্রতিদিন সে দেশে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক সংকট গভীর হয়েছে৷ 

দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য মৌলিক বস্তু সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কাস্তিয়ো সমর্থকরা বোলুয়ার্তের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ক্রমাগত আন্দোলন চালাচ্ছে। 

প্রেসিডেন্ট দিনা ২০২৩ সালের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, তা রুখে দিয়েছে পেরুর আইনপ্রণেতারা। বিক্ষোভকারীরা বারবার দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানালেও কংগ্রেস তা করতে নারাজ৷ ফলে এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পেরুতে৷ 

নতুন করে ভোট গ্রহণের জন্য প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের প্রস্তাবিত বিলটি নিয়ে সংসদে বিতর্ক শুরু হওয়ার আগেই সংসদের প্রযুক্তি বিষয়ক কংগ্রেসনাল কমিটি সেটি প্রত্যাখ্যান করে দেয়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশ। পেরুর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়ো কংগ্রেস ভেঙে দেন এবং ডিক্রি জারি করে আবারও ক্ষমতা ধরে রাখার থাকার চেষ্টা করলে, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভে-আন্দোলন চলছে পেরুতে৷ এখনও পর্যন্ত মেলেনি সমস্যা মুক্তির পথ৷