নয়াদিল্লি: গতবছর ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত সরকার, আর এই দিনটির বর্ষপূর্তির ঠিক আগের দিনই উস্কানিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নিজেদের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্রে যুক্ত করল পাকিস্তান। মঙ্গলবার একটি নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র অনুমোদন করেছে পাকিস্তান সরকার যেখানে জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং লাদাখকে পাকিস্তানের অংশ হিসাবে দেখানো হয়েছে। এমনকি বিতর্কিত ওই মানচিত্রে গুজরাটের পূর্ববর্তী জুনাগড় এবং স্যার ক্রিককেও পাকিস্তান সীমান্তের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এদিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে ক্যাবিনেট বৈঠকে এই মানচিত্রটি অনুমোদিত হয়। মানচিত্র প্রকাশের পর পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল ও পাকিস্তানবাসীর সমর্থন রয়েছে।” তিনি আরও বলেন,” গতবছর ৫ আগস্ট ভারত সরকারের জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা হিসেবে এই মানচিত্রটি অনুমোদিত হয়েছে।” পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এও যোগ করেছেন যে, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান কেবল জাতিসংঘের সুরক্ষা পরিষদের আওতায় রয়েছে। “আমরা বিশ্বাস করি যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভাবেই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে সামরিকভাবে নয়৷”
ইমরান খানের প্রশংসা করে নিজের প্রতিক্রিয়ায় পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি পাক প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে “অভূতপূর্ব পদক্ষেপ” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কেন্দ্র। এবিষয়ে এক বিবৃতিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একে “হাস্যকর দাবি” বলে সম্পূর্ণ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে, যার কোনো “আইনগত বৈধতা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।”
মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে “আমরা পাকিস্তানের একটি তথাকথিত 'রাজনৈতিক মানচিত্র' দেখেছি যা প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রকাশ করেছেন। এটি অসংগতিপূর্ণ রাজনৈতিক কৌশলের প্রয়োগ, যেখানে ভারতের রাজ্য গুজরাট, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নিয়ে অন্যায্য দাবি করা হয়েছে।” নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই হাস্যকর বক্তব্যগুলির কোনো আইনগত বৈধতা বা আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। বাস্তবে, এই নতুন প্রচেষ্টা কেবল সীমান্ত সন্ত্রাসের মাধ্যমে আঞ্চলিক সীমা সম্প্রসারণের প্রতি পাকিস্তানের মনোসংযোগের বাস্তব সত্যি প্রমাণ করে।
নতুন মানচিত্রে পাকিস্তানের সীমান্তকে ভারত সহ পুরো কাশ্মীরের অঞ্চল হিসাবে পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত করা হলেও চীনের সঙ্গে কাশ্মীর ও লাদাখ সীমান্তের অংশটি চিহ্নিত করা হয়নি এবং “সীমান্ত অমীমাংসিত” হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।