ইসলামাবাদ: শ্রীলঙ্কার পর এবার দেউলিয়া হওয়ার পথে ভারতের আরও এক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। জানা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার মত এবার পাকিস্তানেও ক্রমশই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। সেইসঙ্গে দেশের আর্থিক কোষাগারও প্রায় ফাঁকা হওয়ার পথে। এমতাবস্তায় দেশের সাধারন নাগরিকদের চিন্তা বাড়িয়ে এক ধাক্কায় লিটার প্রতি ৩০ টাকা দাম বাড়ল তরল সোনার। জানা যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার রাস্তাতে হেঁটেই এবার পাকিস্তানেরও জ্বালানি তেলের সঞ্চয় ক্রমশ শেষ হওয়ার দিকেই এগোচ্ছে। আর তাই জ্বালানি তেলের খরচ বাঁচাতে তেলের দাম লিটার প্রতি ৩০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে পেট্রোল ও ডিজেলের এই নতুন দাম। এর ফলে দেশে ১ লিটার পেট্রোলের দাম বেড়ে দাঁড়াল ১৭৯ টাকা ৮৬ পয়সা এবং এক লিটার ডিজেলের দাম বেড়ে হল ১৭৪.১৫ টাকা। জ্বালানি তেলের এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কার সাধারণ নাগরিকের মতোই পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিকও বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমেছেন।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার থেকে ইমরান খানকে সরিয়ে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন শাহবাজ শরিফ। কিন্তু তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণের পরেই জানা যায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার একেবারে তলানিতে এসে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কয়লা থেকে জ্বালানি তেল সবকিছুরই উৎপাদন যত দিন যাচ্ছে ততই খারাপ হচ্ছে। এর ফলে প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাব ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকছে। এর সঙ্গেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসেরও প্রতিনিয়ত পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে যার জেরে সাধারণ মানুষ সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। এমতাবস্থায় পেট্রোল-ডিজেলের দাম এক ধাক্কায় ৩০ টাকা বাড়ানোয় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে খবর।
অন্যদিকে শাহবাজ শরীফের জ্বালানির দাম এক ধাক্কায় এতটা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দিন কয়েক আগেই তিনি জ্বালানি তেলের খরচ কমাতে শুল্কের হার কমানোর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে সিদ্ধান্ত তার সমর্থন এবং প্রশংসা করেছিলেন। সেই সময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের কথা ভেবে তবেই সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এর সঙ্গেই তিনি আমেরিকার চোখরাঙানি উপেক্ষা করেও ভারত যে রাশিয়া থেকে কম দামে জ্বালানি তেল আমদানি করছে সেই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন। কিন্তু ভারত যা পেরেছে তা তাঁর নিজের দেশ তথা দেশের সরকার করতে অক্ষম। আর তাই শুক্রবার জ্বালানির উত্তরোত্তর মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন ইমরান।