ইসলামাবাদ: আন্তর্জাতিক মহলকে খানিকটা অবাক করেই সম্প্রতি ভারতের দরিদ্র মানুষের অ্যাকাউন্টে নদগ টাকা পাঠিয়ে সাহায্যের প্রস্তাব দেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান৷ যদিও পাক প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব হাসিমুখেই ফিরিয়েছে ভারত৷
করোনা সংক্রমণ রুখতে দীর্ঘ লকডাউনে সমস্যায় পড়েছেন ভারতের লাখ লাখ মানুষ৷ কিছু দিন আগেই পাক সংবাদপত্র দা এক্সপ্রেস ট্রাইবুনে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, লকডাউনের জেরে ৮৪ শতাংশ ভারতীয় পরিবারের মাসিক উপার্জন কমে গিয়েছে৷ এই অবস্থায় ভারতকে আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব পাঠান পাক প্রধানমন্ত্রী৷ ট্যুইট করে তিনি বলেন, ‘‘রিপোর্ট বলছে, বাড়তি আর্থিক সহায়তা ছাড়া ভারতের ৩৪ শতাংশ মানুষ এক সপ্তাহের বেশি জীবনধারণ করতে পারবে না৷ আমি ইতিমধ্যেই ভারতকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছি৷’’ ইমরান খান আরও জানান, আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত পাকিস্তানের সরাসরি নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প ভারতের সঙ্গে ভাগ করে নিতে প্রস্তুত তিনি৷
এই বিষয়ে পাক সংবাদপত্রের রিপোর্টে একটি সমীক্ষা তুলে ধরা হয়েছে৷ এই সমীক্ষাটি করেছে পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুম্বইয়ের ভারতীয় অর্থনীতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (সিএমআইই)-এর আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। এই গবেষণার তথ্যে কোনও ভুল নেই বলে দাবি করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসে ‘এহসাস এমার্জেন্সি ক্যাশ প্রোগ্রাম’ চালু করেছিল পাকিস্তান৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১.২ কোটি পরিবারের হাতে নদগ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়৷ ৭৫ ডলার (৫,৬৭৬ টাকা) করে পায় প্রতিটি পরিবার৷ ৩ জুন এই প্রকল্পকে সাধুবাদ জানায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ফোরাম৷
অন্যদিকে, লকডাউন শুরু হতেই ভারতে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন৷ এর পর করোনা প্যান্ডেমিকে আর্থিক পরিস্থিতি সামাল দিতে মে মাসে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷
তবে অর্থনৈতিক দিক থেকে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান কী ভাবে ভারতের মদত করতে চাইছে, তা ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই৷ জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে ১ কোটি ৮৫ লক্ষেরও বেশি পাক নাগরিক চাকরি হারানোর মুখে৷ গত মার্চেই ইমরান খান বলেছিলেন, করোনা প্রতিরোধে পাশ্চাত্য দেশগুলির মতো দীর্ঘ লকডাউন সম্ভব নয় পাকিস্তানে৷ তাতে করে আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত পাক মুলুকের অর্থনীতি আরও পঙ্গু হয়ে যাবে৷ এর পরেও ইমরান খানের এই প্রস্তাবে হতবাক বিশ্বের রাজনৈতিক মহল৷