ইসলামাবাদ: শ্রীলঙ্কার পর ভারতের প্রতিবেশী আরো এক দেশের অর্থনীতি কার্যত ধুঁকছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই বেহাল যে পাকিস্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞ মহল। এমতাবস্থায় দেশে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ জ্বালানি সংকট। আর তার জেরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংকট, ব্ল্যাকআউট। আর তাই এবার বিদ্যুতের অপচয় রুখতে নয়া পদক্ষেপ নিল পাকিস্তানের শাহবাদ শরীফের সরকার। জানা যাচ্ছে বিদ্যুৎ বাঁচাতে পাকিস্তানের সরকারি অফিসগুলোতে রাতারাতি আরও একদিন ছুটি বাড়িয়েছে পাক সরকার। যাতে সরকারি অফিসগুলোতে বিদ্যুতের অপচয় কিছুটা কমে তাই এবার থেকে শুধু রবিবার নয় তার আগের দিন অর্থাৎ শনিবারও ছুটি পাবেন সরকারি কর্মচারীরা। অর্থাৎ ছয়দিনের জায়গায় এবার থেকে পাকিস্তানে সরকারি কর্মচারীদের মাত্র ৫ দিন কাজ করতে হবে। তবে এছাড়াও সরকারি অফিসগুলোতে বিদ্যুৎ অপচয় রোধে আরো একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে পাক সরকার। যার মধ্যেই জানানো হয়েছে প্রায় প্রত্যেক দিন তিন ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারি অফিসগুলোতে।
ইতিমধ্যেই এই ছুটি প্রসঙ্গে একটি সরকারি ঘোষণা জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে সপ্তাহের সোম থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত খোলা থাকবে সরকারি অফিস। এর মধ্যে একটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত থাকবেন নামাজের বিরতি। শুক্রবার একই সময় অফিস খুললে এবং বন্ধ হলেও জুম্মাবারে নামাজ পাঠের সময় বাড়ানো হবে। এদিন নামাজের জন্য বেলা সাড়ে বারোটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি অফিস। এর সঙ্গেই জানানো হয়েছে, এরপর থেকে রবিবার নয়, শনি এবং রবি দুই দিন বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি অফিস।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সরিয়ে গত ১২ এপ্রিল শাহবাজ শরীফ পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শপথ গ্রহণ করার পরেই সরকারি কর্মচারীদের শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করেছিলেন। সরকার গঠনের পরপরই তিনি সরকারি কর্মচারীদের সপ্তাহে পাঁচ দিনের পরিবর্তে ছয়দিন কাজ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ফের আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে বাধ্য হলেন শাহবাজ শরিফ। তবে বিদ্যুৎ ছাড়াও আরও বেশ কিছু নতুন নিয়ম নীতি চাপানো হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের ওপর। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম ওরঙ্গজেবের কথায়, সরকারি অফিসগুলির নতুন করে গাড়ি কেনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে অফিসে আর যাতে এয়ারকন্ডিশনের মত যন্ত্রপাতি ক্রয় না করা হয় সে ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর যুক্তি, এইভাবে সরকারি অফিসগুলোতে নিয়ন্ত্রণ করলে বিদ্যুতের ঘাটতি অনেকটাই কমবে এবং ধীরে ধীরে সমস্যার সমাধান হবে।