ওয়াশিংটন: দেশে বর্গি হানার পরিস্থিতি। তালিবানের প্রত্যাবর্তনের খবরেই শিউরে উঠেছেন আফগান নাগরিকরা। যেন যেন প্রকারেণ, দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেন তাঁরা। তালিবান শাসনে বদলে যায় সেদেশের মেয়েদের জীবন, তাই পরিবারের মেয়েদের বাঁচাতে অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। কিন্তু, যারা পারেন নি! তাঁরা বেছেছেন বিকল্প পথ।
সম্প্রতি আফগানিস্তান ছেড়ে আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার আফগান শরণার্থী। কিন্তু, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বৃদ্ধ বা অতিবৃদ্ধ শরণার্থীর সঙ্গে নাবালিকা স্ত্রী রয়েছে। যা দেখে হতবাক মার্কিন আধিকারিকরা। সেই সব বৃদ্ধদের সঙ্গে থাকা স্ত্রীদের অনেকেরই বয়স মাত্র ১২ বছর! আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেল’ সূত্রে খবর, আমেরিকায় আশ্রয় নিতে আসা বেশ কয়েকজন বৃদ্ধ আফগান শরণার্থীর সঙ্গে নাবালিকা স্ত্রী রয়েছে। অভিযোগ, আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসতে মরিয়া হয়ে এই ‘বিত্তশালি’ বৃদ্ধদের সঙ্গে নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে অনেক পরিবার।
তালিবানের রক্তচক্ষুর হাট থেকে পালিয়ে বাঁচতে এদের অনেককেই আবার ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ। কাতারের রাজধানী দোহায় আফগান শরণার্থীদের জন্য ‘ট্রানজিট ক্যাম্পে’ মার্কিন অধিকারিকদের কাছে এই বিষয়ে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। শরণার্থী কিশোরীদের অনেকেরই দাবি, দেশ ছেড়ে আসার বিনিময়ে তাঁদের শরীর বিকিয়ে দিতে হয়েছে। ধর্ষণের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে তাঁরা।
ইতিমধ্যে ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে আমেরিকা। আফগানিস্তানে রাজত্ব শুরু হতেই পুরনো ফর্মে ফিরেছে তালিবান। ধর্মীয় আইনের নামে নারী নির্যাতন এখন সেদেশের নিত্য ঘটনা। কয়েকদিন আগেই, আঁটসাঁট পোশাক পরার জন্য এক মহিলাকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। যদিও, তালিবানি স্বৈরাচারীতার বিরোধিতায় কিছুটা হলেও রুখে দাঁড়িয়েছে আফগান মহিলাদের একাংশ। নিজেদের শিক্ষা, অধিকারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। সেই আন্দোলন প্রতিরোধেও নৃশংসতার প্রমাণ দিচ্ছে তালিবান। যে আক্রোশ, অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচাতে নাবালিকাদের জন্য এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের পরিবার, আদৌ কতটা সুরক্ষিত রাখা গেল তাদের? প্রাণের বিনিময়ে নাবালিকাদের সম্ভ্রম নিয়ে টানাটানি… এটা কি পৈশাচিক আচরণ নয়?