দুবাই: ক্রমশ উর্ধ্বমুখী তেলের দামে কার্যত নাজেহাল গোটা বিশ্ববাসী। কিন্তু এতেই মাথায় হাত পড়লে চলবে না, কারণ বিশ্ব বাজারে অপোরিশোধীত তেলের দাম আরও বাড়তে চলেছে। এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমান। মার্কিনি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রবিবার তিনি সাফ জানিয়েছেন, সকলে মিলে একজোট হয়ে ইরানের মোকাবিলা না করলে এমনটাই হবে।
বিগত কয়েকমাস ধরে ইরান এবং সৌদির মধ্যে তেলযুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। যুদ্ধের অন্যতম কারণ পরমাণু চুক্তি ঘিরে আমেরিকা এবং ইরানের ঠাণ্ডা লড়াই। গত মে মাসে সৌদির দুই তেল পাম্পিং স্টেশনে ড্রোন হামলা চালায় ইরানের মিত্র দেশ ইয়েমেনের মদতপুষ্ট হাউতি বিদ্রোহীরা। আর এরপর থেকেই ইরানের উপর আরও কড়া হয়েছে মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আরামকো-র তেলের খনি এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার আবকাইক এবং খুরাইসে ড্রোন হামলার অভিযোগ ওঠে ইরানের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদির যুবরাজের বক্তব্য, ইরানকে রুখতে এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে উত্তেজনা আরও বাড়বে। ফল স্বরূপ বিশ্বজুড়ে তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হবে। অকল্পনীয় ভাবে বাড়বে তেলের দাম, দাবি যুবরাজের। সূত্রের খবর, সেই হামলার জেরে গোটা বিশ্বে প্রায় ৫ শতাংশ ঘাটতি তৈরি হয়েছে তেল সরবরাহে।
এদিকে সৌদি আরব ছাড়াও ১৪ সেপ্টেম্বরের হামলার জন্য ইরানকেই প্রধান দায়ি করেছে আমেরিকা এবং ইউরোপ। যদিও ইরান সমস্ত দায় প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে। এদিনের সাক্ষাৎকারে সৌদির যুবরাজ আরও জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে আলোচনা করা। কারণ তাঁর মতে, সামরিক পথে এই সমস্যার সমাধান কখনই সম্ভব নয়। তাছাড়া সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে যুদ্ধ বাধলে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে বড়সড় ধস নামবে। সেইসঙ্গে পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর খুব একটা ভালো প্রভাব পড়বে না। তাই এই মুহূর্তে আমেরিকার নতুন কোনও চুক্তির কথা ভাবা উচিৎ।
অন্যদিকে, ইরানের মিত্র দেশ ইয়েমেনের হাউতি জঙ্গিরা দাবি করেছে সীমান্তবর্তী এলাকায় সৌদি জোট বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছে তারা। তাদের দাবি, সৌদি অফিসার সহ জোট বাহিনীর প্রায় ৫০০ সেনাকে হত্যা করেছে। যদিও সৌদি বাহিনী এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য পেশ করেনি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘটনাটি সত্যি হলে সৌদি কিংবা আমেরিকার বিরুদ্ধে হাউতিদের এটা বিরাট জয়।