BJP MLA
গাজা: তখন ছিল সুখের দিন। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি হত আইসক্রিম। ছোট ছোট বাচ্চারা সেই আইসক্রিম ট্রাক দেখেই উচ্ছ্বসিত হত। কিন্তু ইজরায়েলের সঙ্গে প্যালেস্টাইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সুখ তো দূর, দিন-রাতও যেন মুছে গিয়েছে গাজাবাসীদের জীবন থেকে। এখন চারিদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা মৃতদের, হাহাকার, চিৎকার। দেখতে দেখতে আজ সেই পরিচিত আইসক্রিমের গাড়িটা পরিণত হয়েছে চলমান মর্গে! কারণ গাজার কবরখানায় আর কবর দেওয়ার জায়গা নেই, উপচে পড়ছে আসল মর্গও! তাই মৃতদেহ রাখতে ভরসা ওই আইসক্রিম ট্রাক।
গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে বলা যাবে না যে কতজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু দু’পক্ষের হাজার হাজার মানুষ যে ইতিমধ্যেই প্রাণ ত্যাগ করেছেন তা বলাই বাহুল্য। অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী, প্যালেস্টাইনের ২ হাজার ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, জখম হাজারের বেশি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে গাজা স্ট্রিপের হাসপাতাল এবং কবরখানায় মৃতদেহ রাখার জায়গা হচ্ছে না! তাই মৃতদেহে যাতে পচন না ধরে সেই কারণেই একে একে আইসক্রিমের ট্রাক কিনছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও এই ব্যবস্থা কত দিন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে।
আসলে যাদের মৃতদেহ এইভাবে রাখা হচ্ছে তাদের পরিবারের তরফে কেউই আসেনি। অনুমান করাই যায়, এমন অনেক দেহ আছে যার পরিবারটাই হয়তো আর নেই। যুদ্ধের গ্রাসে তারাও চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ওই মৃতদেহগুলি সংরক্ষণ করে রাখতে গেলে এখন বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মনে রাখতে হবে, অর্ধেক লন্ডন শহরের সামান্য বেশি জায়গা নিয়ে গঠিত গাজা। মাত্র ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। তাই মৃতদের কবর দেওয়ার জন্য গণকবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও শয়ে শয়ে মানুষের মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা থাকবে না সেখানে।