ব্রিটেন: বিগত আড়াই বছর ধরে তান্ডব দেখানোর পরেও এখনও শেষ হয়নি করোনার ত্রাস। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়ের পরে এবার করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়ে কার্যত উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহল। কিন্তু এর মধ্যেই মাথাচাড়া দিচ্ছে আরও একটি মহামারীর সম্ভাবনা। সম্প্রতি জানা যাচ্ছে করোনার মধ্যেই ব্রিটেনের এক ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ব্রিটেনেও কিন্তু ফের নতুন করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তার মধ্যেই ব্রিটেনের ওই নাগরিকের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার খবর যেন ঘৃতাহুতির কাজ করেছে। আফ্রিকার নাইজেরিয়াকে মাঙ্কিপক্সের আঁতুড়ঘর বলা হয়। আর সেই নাইজেরিয়া ফেরত ওই ব্যক্তির শরীরে মিলেছে ম্যাক্সি পক্সের এই মারণ ভাইরাস। এর জেরে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ব্রিটেন তথা বিশ্বের চিকিৎসক মহল। মুলত সেই কারণেই ওই ব্যক্তিকে তড়িঘড়ি বাকিদের থেকে আলাদা করে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গে পরিস্থিতির উপরেও বিশেষ নজর রাখছে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসুরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বে প্রথম মাঙ্কিপক্সের আবির্ভাব হয় ১৯৭০ সালে আফ্রিকার নাইজেরিয়ায়। সাধারণত এই ভাইরাস ইঁদুরের মত কোনও প্রাণীর থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। করোনার মতো এই ভাইরাসও সংক্রামক। তবে করোনার মত এত দ্রুত এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে না। আর তাই আপাতত উদ্বেগের কিছু না থাকলেও পরিস্থিতি প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে বৃটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে এমন বিরল একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন বৃটেনের ওই নাগরিক? জানা যাচ্ছে ওই ব্যক্তি কিছুদিন আগেই নাইজেরিয়া গিয়েছিলেন। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা সেখান থেকে তিনি মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস শরীরে বহন করে নিয়ে এসেছেন। আপাতত ব্রিটেনের গাইজ এন্ড সেন্ট টমাস হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ওই আক্রান্ত। সেই সঙ্গে এই কয়েকদিনে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরকেও খোঁজার কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। জানা যাচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তির ধুম জ্বর, সেইসঙ্গে মাথাব্যথা রয়েছে। এছাড়া তাঁর পেশী এবং পিঠে অসহ্য যন্ত্রণা ও খাবার গিলতে কষ্ট হচ্ছে। তবে মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে সবথেকে ভয়ঙ্কর যে জিনিস সেটা হল এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সারা গায়ে ফোসকার মতো ছোট ছোট ৱ্যাস বের হয়। সেইসঙ্গে গায়ে, হাতে, পিঠে মারাত্মক যন্ত্রণা হয়। এছাড়া গলাব্যথা, খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, শ্বাসকষ্টের মত লক্ষণও মাঙ্কিপক্সের সাধারণ লক্ষণ বলে জানা যাচ্ছে। তবে এর সঙ্গেই জানা যাচ্ছে ওই ব্যক্তির প্রাথমিক স্তরেই এই ভাইরাস ধরা পড়েছে। ফলে আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।