ওয়াশিংটন: ফের জেগে উঠছে শার্লি এবদো। মুসলিম পয়গম্বর হজরত মহম্মদের কার্টুন প্রকাশের পর ২০১৫ সালে বন্দুকধারীদের আক্রমণের নিশানায় আসে বিখ্যাত এই ফরাসি কার্টুন ম্যাগাজিন। এই সপ্তাহে হানায় জড়িত সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হতে চলেছে। সেই উপলক্ষেই সেই বিতর্কিত ছবি পুনঃপ্রকাশিত হতে চলেছে। সাম্প্রতিকতম মুদ্রণে ওই বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশের প্রসঙ্গ টেনে ম্যাগাজিনের ডিরেক্টর লরাঁ রিস সরিসু এক সম্পাদকীয়তে লেখেন, আমরা কখনও নত হব না, আমরা কখনও হাল ছাড়ব না।
২০১৫ সালের ওই হামলায় পাবলিশিং ডিরেক্টর শার্বসহ বারোজনের মৃত্যু হয়। শার্ব ছাড়াও তৎকালীন ফরাসি জনপ্রিয় বহু কার্টুনিস্টের রক্ত ঝরে ২০১৫-র ৭ জানুয়ারি। দুই ভাই সাইদ ও শেরিফ কৌয়াচির গুলিতে প্যারিসে ম্যাগাজিনের অফিসের মেঝে রক্তস্নান করে। ঘটনার পরপরই দুই হামলাকারীকে মেরে ফেলা হয়। তবে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরো ১৪জনকে গ্রেফতার করা হয়, যারা পরে একটি ইহুদি পরিচালিত সুপারমার্কেটকেও নিশানা করে। সেই সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধেই এই সপ্তাহে মামলা শুরু হতে চলেছে। এবদোর সাম্প্রতিক ইস্যুর কভারে শোভা পাচ্ছে ২০০৫ সালে ডেনিশ দৈনিক জাইল্যান্ডস্ পোস্টেনে প্রকাশিত একডজন কার্টুন, যা ২০০৬ সালে শার্লি এবদোয় প্রকাশ পায়।
এই কার্টুনগুলি দুনিয়াজুড়ে মুসলিম সমাজে ক্ষোভের ঝড় বইয়ে দেয়। কভারের মাঝ বরাবর রয়েছে কার্টুনিস্ট জ্যঁ কাবুর আঁকা পয়গম্বরের ছবি। ২০১৫-র ওই হামলায় প্রাণ যায় কাবুরও। প্রাসঙ্গিকভাবে ইস্যুর শিরোনাম রাখা হয়েছে, এটাই সব, শুধু ওটার জন্য। ম্যাগাজিনের সম্পাদকীয় বিভাগ থেকে দাবি ওঠে এখনই উপযুক্ত সময় যখন এটি আবার প্রকাশ করা যেতে পারে, কারণ মামলা শুরু হয়েছে। ম্যাগাজিনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫-র পর থেকে বারবার মহম্মদের অন্য ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের অনুরোধ আসতে থাকে। কিন্তু কখনই তা করা হয়নি কারণ এটি নিষিদ্ধ বলে নয়, এটি আইনানুগই ছিল।
একাজ করা হয়নি কারণ এর জন্য একটি ভালো কারণের প্রয়োজন ছিল, একটি অর্থবহ কারণের প্রয়োজন ছিল যা বিতর্ককে কিছুটা হলে সারবত্তা দিতে পারে। কাগজের এহেন আক্রমণের পন্থা ফরাসি জনগণের বহুলাংশের কাছেই এটিকে বাক স্বাধীনতার উদাহরণ হিসেবে পেশ করে। অন্যদিকে বেশ কিছু মানুষ মনে করেন ম্যাগাজিন কিছুটা হলেও অধিকারের সূক্ষ্ম সীমা লঙ্ঘন করেছে। তবে হামলার পর গোটা দেশ এক হয়ে এক গণ আন্দোলনে নামে, যার স্লোগান ছিল জেসুইশার্লি বা আমিই শার্লি।