কাঠমান্ডু: সম্প্রতি ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, যে তারা চীনের পক্ষপাত নিয়ে ভারত বিরোধী কাজ করছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি একাধিকবার ভারত বিরোধী মন্তব্য করেছেন। অযোধ্যা তথা ভগবান রামকে নিয়েও মন্তব্য করতে ছাড়েননি। এবার তিনি নিজের মন্ত্রিসভায় রদবদল করে ভারতের উদ্দেশ্যে শান্তির বার্তা দিতে চাইলেন হয়তো! কারণ তার মন্ত্রিসভার রদবদল করে উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখরেলকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন অলি। আপাতত তিনি দফতরবিহীন মন্ত্রী। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিগত কিছু সময় ধরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তলানীতে ঠেকেছিল নেপালের। অযোধ্যা এবং ভগবান রামকে নিজেদের বলে দাবি করেছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। এমনকি জানিয়েছিলেন, আসল অযোধ্যা নাকি নেপালে অবস্থিত। সেই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। অন্যদিকে ভারত-নেপাল সীমান্ত গুলি চলার মতো ঘটনাও ঘটে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত ছিল। মনে করা হচ্ছিল চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারত বিরোধী কাজ করছে নেপাল। তবে এবার মন্ত্রিসভায় রদবদল করে কার্যত শান্তির বার্তা দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
যাকে তিনি ছাঁটাই করেছেন, সেই ঈশ্বর পোখরেল মূলত ভারত বিরোধী এবং চীনপন্থী নামে পরিচিত। তাই তাকে দপ্তরবিহীন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই ভাবে নয়াদিল্লির কাছে নিজের ব্যক্তিত্ব ভাল করতে পারেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, উপপ্রধানমন্ত্রীকে ছাটাই করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব নিজের অধীনে রেখেছেন অলি। আগামী নভেম্বর মাসে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারভানের নেপাল সফরে যাওয়ার কথা। তার আগে নেপাল সরকারের এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
মূলত, কালাপানি, লিপুলেক এবং লিম্পিয়াধুরাকে কেন্দ্র করে নেপাল এবং ভারতের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছিল। এই তিন ভারতীয় এলাকাকে নেপাল নিজেদের বলে দাবি করে। পরবর্তী সময়ে লাদাখ সীমান্তে চীনের সঙ্গে ভারতের সংঘর্ষের পরে আরও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে নেপাল। পরবর্তী ক্ষেত্রে একের পর এক ইস্যুতে ভারত বিরোধী মন্তব্য করে তারা। সেই সময় অন্যতম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখরেল। এবার তাকেই মন্ত্রিসভা থেকে বেদখল করলেন প্রধানমন্ত্রী অলি।