কাঠমান্ডু: নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির উপর জনগণের ক্ষোভ দীর্ঘদিন ধরেই মাথা চারা দিয়ে উঠছিল। কিছুদিন আগেই তাঁর বিরুদ্ধে একদল মানুষকে নেপালের রাজপথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গিয়েছিল। উঠেছিল ফের রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিও। তবে এবার জনগণের সেই ক্ষোভ পৌঁছে গেল দলের অভ্যন্তরেও। আর তার জেরেই নেপালের রাজনীতিতে ঘটে গেল আরো এক ঐতিহাসিক পালাবদল।
নেপালে ক্ষমতাসীন দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (NCP) দেশ জোড়া বিক্ষোভ এবং দলীয় অসন্তোষের জেরে দল থেকে বহিষ্কার করেছে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলিকে, এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। এদিন সাংবাদিকদের সামনে এনসিপির দলীয় মুখপাত্র নারায়ণকাজী শ্রেষ্ঠা বিবৃতির মাধ্যমে জানান, নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি আর তাঁদের দলের সদস্য নয়। “আজ দলের সেন্ট্রাল কমিটির মিটিংয়ে কে পি শর্মা ওলিকে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আর নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির একটাও সদস্যপদের অধিকারী নন”, বলেন তিনি।
কেন দল থেকে বহিষ্কার করা হল নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে? জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে সংবিধান বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছিল। এ ব্যাপারে দলের তরফ থেকে কে পি শর্মা ওলির কাছে একটি চিঠিও পাঠানো হয়। সূত্রের খবর ওই চিঠিতে তাঁর নানা কাজের জবাবদিহি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিঠির কোনো উত্তর নেপালের প্রধানমন্ত্রী দেন নি। এদিন দলীয় মুখপাত্র নারায়ণকাজী শ্রেষ্ঠা জানান, “আমরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি কিন্তু তিনি আমাদের চিঠির জবাব দেন নি। দলীয় নিয়ম মেনেই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” বস্তুত, গত সপ্তাহেও প্রধানমন্ত্রী ওলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দলের দুই বর্ষীয়ান নেতা। তাঁকে যে বহিষ্কার করা হতে পারে তেমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল আগেই।
উল্লেখ্য, দীর্ঘকালীন রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসানের পর ২০১৫ সালে নেপালে প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। কিন্তু সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ওলি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন যা দেশের অভ্যন্তরে নানা ভাবে সমালোচিত হয়। এর জেরেই নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির তরফ থেকে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।