কাজ পাবেন না বিশ্বের প্রায় অর্ধেক শ্রমিক, চরম বেকারত্বের ইঙ্গিত রাষ্ট্রসংঘের

কাজ পাবেন না বিশ্বের প্রায় অর্ধেক শ্রমিক, চরম বেকারত্বের ইঙ্গিত রাষ্ট্রসংঘের

নিউ ইয়র্ক: একটা ভাইরাসের দাপটে প্রায় লণ্ডভণ্ড বিশ্ব অর্থনীতি৷ বিশ্বজুড়ে বেকারত্বের মুখোমুখি অসংগঠিত ক্ষেত্রের প্রায় ১৬০ কোটি মানুষ৷  রাষ্ট্রসংঘেরর শেষ পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিল৷

করোনার জেরে ৪৩০ মিলিয়নেরও বেশি সংস্থা, বিশেষ করে বিপুল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খুচরো ব্যবসায়ী এবং উৎপাদনক্ষেত্রগুলি৷ রাষ্ট্র সংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) জানাচ্ছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ফলে কাজের সময় অনেকটাই কমে গিয়েছে৷ যার প্রভাব পড়েছে উৎপাদন ক্ষেত্রে৷ বিশ্বব্যাপী ৩.৩ বিলিয়ন কর্মী রয়েছে৷ যাঁদের মধ্যে ২ বিলিয়ন   অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক৷ এর মধ্যে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন কর্মী, যা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক কর্মীর সমান, আজ অনিশ্চয়তার সম্মুখীন৷ করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে অর্থনীতির উপর যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাতে জীবনধারণের জন্য ন্যূনতণ উপর্জন করাটাও এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে কঠিন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

আইএলও জানাচ্ছে, লকডাউনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত সেক্টরগুলিতে কাজ করা কর্মীদের উপার্জন প্রথম এক মাসের মধ্যেই ৬০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে৷ আফ্রিকা এবং আমেরিকায় এই হার ৮০ শতাংশ, ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় কমেছে ৭০ শতাংশ উপার্জন৷ এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উপার্জন কমেছে ২১.৬ শতাংশ৷ আইএলও-র ডিরেক্টর জেনারেল গাই রাইডার বলেন, একদিকে করোনা পেন্ডামিক অন্যদিকে চাকরির সংকট, জোড়া ফলায় বিদ্ধ তামাম দুনিয়া৷ এই অবস্থায় বিশ্বের দুর্বল শ্রমিকদের রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠেছে৷ 

তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষের রোজগার নেই মানে তাঁদের কাছে খাবারও নেই৷ নেই ভবিষ্যতের কোনও নিরাপত্তা৷ তাঁদের যেমন কোনও সঞ্চয় নেই৷ তেমনই নেই ঋণ পাওয়ারও সুযোগ৷’’ রাইডার বলেন, ‘‘এটাই বিশ্বের কর্মজগতের আসল রূপ৷ এই সময় আমরা যদি তাঁদের পাশে দাঁড়াতে না পারি, তাহলে এক কথায় তাঁরা ধ্বংস হয়ে যাবে৷’’ করোনা মোকাবিলায় যে সকল দেশে কর্মক্ষেত্র বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দেখা গিয়েছে গত দুই সপ্তাহে ওই দেশগুলির শ্রমিকদের জীবন যাত্রার মান হু হু করে কমতে শুরু করেছে৷ এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা, প্রয়োজনীয় আর্থিক প্যাকেজ এবং পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা পরিস্থিতির বদল আনতে পারে বলেই মনে করছে আইএলও৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *