নাসার মহাকাশযান ‘জুনো’র চোখে ধরা দিল বৃস্পতির নয়া রহস্য

নাসার মহাকাশযান ‘জুনো’র চোখে ধরা দিল বৃস্পতির নয়া রহস্য

নিউ ইয়র্ক: সৌরজগতের সর্ববৃহৎ গ্রহ বৃহস্পতির ঘরে উঁকি দিতে নাসা পাঠিয়েছে তাদের মহাকাশযান জুনো-কে৷ গুরুগ্রহের হালহকিকত জানতে গিয়েই জুনোর চোখে ধরা পড়েছে বৃহস্পতির বুকে ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব৷ বৃহস্পতির দক্ষিণ গোলার্ধে বেশ কয়েকটি ঝড়ের ছবি তুলেছে জুনো৷ 

এর আগে বৃহস্পতির ঘরে কড়া নাড়তে গিয়ে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল জুনো৷ মহাকাশযানের হাই রেজোলিউশন ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পটে ঝড়ের প্রলয়নৃত্য৷ বহু বছর ধরেই চলছে ঝড়ের এই তাণ্ডব৷ তবে সম্প্রতি জুনো বৃহস্পতির দক্ষিণ গোলার্ধের যে  ছবিটি তুলেছে, সেখানে ধরা পড়েছে ছোট, ডিম্বাকৃতি আকারের কিছু বস্তু৷ যা একেবারেই নতুন৷ 

জুনোর পাশাপাশি গুরুগ্রহের এই বৈশিষ্ট্যটি আবিষ্কার করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লাইভ ফস্টারও৷ চলতি বছর ৩১ মে নিজের দূরবীন দিয়েই চোখ রেখেছিলেন বৃহস্পতির পাড়ায়৷ সেই সময়ই এই নতুন স্পটটি চোখে পড়ে তাঁর৷ বৃহস্পতির যে অংশে শক্তিশালী মিথেন গ্যাস রয়েছে, সেখানে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সংবেদনশীল ফিল্টারের মাধ্যমে এই স্পট উজ্জ্বলভাবে ধরা পড়েছিল৷ অথচ এর কিছুক্ষণ আগে অস্ট্রেলিয়ার এক মহাকাশ বিজ্ঞানীর তোলা ছবিতে ধরা এই চিহ্ন বা স্পট ধরা পড়েনি৷  

ক্লাইভ ফস্টারের পর্যবেক্ষণের ঠিক দু’দিন পরে অর্থাৎ ২ জুন, বৃহস্পতির চারিপাশে ২৭তম চক্করটি কেটেছিল জুনো৷ নাসার এই মহাকাশযানটি বৃহস্পতির এতটাই কাছে ছিল যে, মিশন টিম নিশ্চিত ছিল নতুন কোনও বৈশিষ্ট্য তুলে আনবে জুনো৷ ঘরোয়াভাবে এই নতুন  আবিষ্কারকে ‘ক্লাইড’স স্পট’ বলে অভিহিত করা হয়৷ আরও এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী জুনোর ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে এই ছবি মিলিয়ে দেখেছিলেন৷ 

প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে বৃহস্পতির কক্ষ পথে মহাকাশযান ‘গ্যালিলিও’-কে পাঠিয়েছিল নাসা। ২০০৩ সালে গ্যালিলিও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে জুনোই এখন নজগদারি চালাচ্ছে বৃহস্পতির ঘরে। গ্যালিলিও আভাস দিয়েছিল, জুনো প্রমাণ করে দিয়েছে, গত প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর ধরে বৃহস্পতির বুকে সুবিশাল একটা এলাকা জুড়ে তুমুল ঝড় বয়ে চলেছে। এমন দীর্ঘমেয়াদী ঝড় এখনও পর্যন্ত সৌর পরিবারের আর কোনও গ্রহে দেখা যায়নি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *