জেনেভা: মাত্র কয়েকদিন আগেই আত্মপ্রকাশ। ইতিমধ্যেই ছড়িয়েছে ১২ টি দেশে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। হুয়ের হিসেব বলছে ইতিমধ্যেই ১২ টি দেশের অন্ততপক্ষে ১২০ জন আক্রান্ত মাঙ্কি পক্সে। এ যেন করোনার ভয়াবহ স্মৃতিই ফের মাঙ্কি পক্সের রূপ নিয়ে ফেরত আসছে। তবে কি পরবর্তী মহামারী ডেকে আনবে এই ভাইরাসই? বিশ্বজুড়ে মাঙ্কি পক্স আতঙ্কের মধ্যেই এই সংক্রমণ নিয়ে বার্তা দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা হু।
সম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই কেন এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে এবং আগামীতে এটি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন বিশ্ববাসীর জন্য সে বিষয়ে শুরু হয়েছে গবেষণা। মাঙ্কি পক্স সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় গুলি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এর সঙ্গেই বিসব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এখনই যদি এই ভাইরাস নিয়ে সতর্ক না হওয়া হয় তাহলে আগামীতে এটি মহামারী ডেকে আনতে পারে। ফলে দিন যত যাচ্ছে ততোই একটু একটু করে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮০। এছাড়াও আরো ৫০ জনের মধ্যেও এই ভাইরাসের উপসর্গ দেখা মিললেও তারা এখনও মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত কিনা সেটি স্পষ্ট ছিল না। হু এর তরফ থেকে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত ২১ জন নিশ্চিতভাবেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই ২১ জনের মধ্যে ফ্রান্সের বাসিন্দা একজন, বেলজিয়ামে দুইজন, জার্মানিতে একজন, ইতালিতে একজন, পর্তুগালে ১২ জন, যুক্তরাজ্যে ৯ জন, কানাডাতে দুজন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়াতে সম্ভাব্য একজন মাঙ্কি পক্সের আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যে দেশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক, দুই ছিল সেটাই পড়ে বেড়ে ১০, ২০ হয়েছে বলে খবর। আর তারপরেই হু’য়ের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘ আমাদের মতে খুব দ্রুতগতিতে অন্য শহর ও দেশগুলিতেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। এখনও পর্যন্ত যেসব দেশ নন এপিডেমিক কান্ট্রি হিসেবে চিহ্নিত অর্থাৎ যেখানে এখনও মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণ ঘটেনি সেখানেও ছড়িয়ে পড়বে এই ভাইরাস।’
জানা গিয়েছে, এই মাঙ্কি পক্স নিয়ে যাতে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করা যায় সে জন্য সার্বিক পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই কারণেই হু-এর বিজ্ঞানীরা শীঘ্রই একটি বৈঠকে বসতে চলেছেন এবং সেখানে কিভাবে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে ও এর প্রতিশেধক কি, কিভাবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এছাড়া জানানো হয়েছে, করোনার মতো মাঙ্কি পক্সও একটি সংক্রামক অসুখ। আক্রান্তের ব্যবহার করা তোয়ালে, জামা কাপড়ের মতো ব্যক্তিগত জিনিস ব্যবহারে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে খবর মাঙ্কি পক্সের মৃত্যুর হার অনেকটাই কম। কিন্তু করোনার মত মাঙ্কি পক্সেরও সংক্রমণ হার বেশি কিনা সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো যায়নি।